174598

আলোচনায় আরেক ‘চা ওয়ালা’

নূসরাত জাহান: ২০১৪ সালে ভারতে যে মোদি হাওয়া লেগেছিল গত তিন বছরে তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সদ্য শেষ হওয়া উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন তারই প্রমাণ দিল। লোকসভার ৮০ আসনের মধ্যে বিজেপি ৭৩টিতে জয়ী হয়েছে। ‘চা ওয়াল’ থেকে ভারতের ক্ষতায় এসেছিলেন নেরেন্দ্র মোদি। উত্ত প্রদেশে নির্বাচনের পর মোদিকে ছাপিয়ে আলোচনা চলছেন আরেক ‘চা ওয়ালা’। এ নির্বাচনে বিজেপির অর্জনের পেছনে তার অবদানও কম নয়। তিনি হচ্ছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি কেশভ প্রসাদ মৌর্য।
খোদ বিজেপির সভাপতি বলছেন, বিধানসভায় বিজেপির নিরঙ্কুশ জয়ের অন্যতম নায়ক কেশভ।
গরিব পরিবারের জন্ম নেওয়ায় কেশভের শৈশব কেটেছে চরম দরিদ্রতার মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী মোদির মতোই তিনিও চায়ের দোকানে কাজ করেছেন। তার গ্রামে তিনি ‘চা ওয়ালা’ হিসেবেই পরিচিত। পত্রিকার হকারও ছিলেন এক সময়। কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করার পাশাপাশি তিনি পড়াশুনা চালিয়ে গেছেন।
লোকসভার সদস্যদের জন্য থাকা ওয়েব পেজে কেশভ লিখেছেন, ‘শৈশবে চা বিক্রি করতে করতেই আমি সমাজ সেবার প্রতি আগ্রহী হই। সেখান থেকেই রাজনীতে আসা।’
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবাক সংঘের বাল স্বামী সেবক হিসেব প্রথমে কাজ করছে কেশভ। এরপর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলে যোগ দেন। ১২ বছর ধরে তিনি এ দুটি সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন। অযোধ্যা ও গো-রক্ষক মুভমেন্টের জন্য তিনি জেলও খেটেছেন। ২০১২ সালে তিনি প্রথম উত্তর প্রদেশে এলাহাবাদ থেকে নির্বাচন করেন এবং জয়ী জন। ২০১৬ সালে তিনি উত্তর প্রদেশ বিজেপির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরই সুবাদে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি অংশ নেন এবং জয়ী হন।
উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আপাতত মনোজ সিনহা কিংবা কেশব প্রসাদের নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। এদের দুজনের মধ্যে এগিয়ে কেশভ। তবে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, এখনও প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা মোদি ও অমিত শাহ ছাড়া আর কেউই জানেন না কে হচ্ছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। জাতপাতের বিষয় মাথায় রাখলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে যোগি আদিত্য নাথ, দিনেশ শর্মা, শ্রীকান্ত শর্মার নামও শোনা যাচ্ছে।
রাজনাথ সিংও মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছেন। তবে তাকে এ নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। মনোজ সিনহা ভূমিহার ও মোদির ঘনিষ্ঠ। আর রাজ্য সভাপতি কেশব ওবিসি।
বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকেই যোগ্যতম ব্যক্তিকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। তবে দলের অনেকের ধারণা, হোলির পরে বিধায়ক দলের বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী স্থির হবে।
দলের একটি অংশ মনে করছে, প্রধানমনন্ত্রী হয়তো কেশভকেই মুখ্যমন্ত্রী করবেন। তা হলে ভারসাম্য থাকবে। আর এক অংশ মনে করেন, যেহেতু পিছিয়ে পড়া শ্রেণি বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, তাই তাদের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.