174196

বাবরি মসজিদ নিয়ে বিজেপির বিপদ আসন্ন

নূসরাত জাহান: ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় থাকা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলেছিল কট্টরপন্থী হিন্দুরা। এ মসজিদ ভেঙে ফেলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেছির কট্টপন্থীরা। এ ধ্বংস লীলায় অংশ নেয় হাজার হাজার কট্টরপন্থী হিন্দুরা। এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব, এমনকি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমহা রাও বাবরি মসজিদে হামলার কথা জানতেন। দেশীয় অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে ডায়নামাইট দিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছিলেন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নেতারা। বাবরি মসজিদ নিয়ে এসব কথা নতুন নয়। নতুন কথা হলো বাবরি মসজিদ ধ্বংসে করা নিয়ে ফের মামলা হতে চলেছে। লালকৃষ্ণ আদভানি, এম এম জোশির নামে ফের মামলা হতে পারে। ফলে এই ইস্যু নিয়ে বিপদ কড়া নাড়ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দরজায়।
আশির দশকের শেষ দিক থেকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বাবারি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির তৈরি দাবিকে রাজনৈতিক দাবিতে পরিণত করে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ উগ্র হিন্দুত্ববাদী জনতা বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয়। এরপরই গোটা ভারত জুড়ে সাম্প্রদায়িতব দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় দু হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
বাবরি মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আবার মামলা হলে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন বিজেপির নেতারা। ধারণা করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারেন আদভানি। সামনে ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার প্রার্থী হওয়ার কথাও রয়েছে। এরই মধে এমন পুরনো অভিযোগ নুতন করে সামনে আসায় বেকায়দায় পড়তে পারেন তিনি।
বিজেপির অনেক নেতাই মনে করেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ্রহ আছে আদভানির। আরএসএস এর একাংশও তাকে এ পদে চাইছে। আর নতুন করে পুরান ঘাঁ জাগত হলে এ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে তাকে।
উত্তর প্রদেশে চলমান বিধানসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোট গ্রহণের আগেই বাবরি মসজিদ ইস্যু সামনে চলে আসায় বিজেচির অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করছেন, এই বিতর্ক ভোটের মেরুকরণে সাহায্য করবে।
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে রায়বেরেলিতে করা এফআইআরে আদভানি, জোশির নাম ছিল। কিন্তু রায়বেরেলির আদালত বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে আদভানিকে খালাস দিয়েছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্টও সেই রায়ই বহাল রাখে।
সিবিআই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, পদ্ধতিগত কারণে আদভানি ও অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ হতে দেওয়া হবে না। আদালত অভিযোগপত্র জমা দিতে বলেছেন সিবিআইকে।
এলাহবাদ হাইকোর্টে ২০১০ সালে আদভানিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাবরি ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করেছিলেন। সেই ১৩ জনের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তদন্ত করতে বলেছেন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.