173875

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনের জন্য হুমকি?

নূসরাত জাহান: ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের সময়ই পর্যটন বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাত নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের ঔদ্ধ্যতপূর্ণ প্রচারের জন্য গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকে। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের নিত্য নুতন ঘোষণা ও পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাত সমস্যায় পড়েছে। এরই মধ্যে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পে ধাক্কা লাগলো যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাতে।
উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের ডারহাম ইউনিভারসিটির মেটাফিজিক্সের অধ্যাপক স্টিফেন মামফ্রড। গত বছর অক্টোবরে রিসার্চ ফেলোশিপ থেকে বড় অংকের টাকা পেয়েছেন। অন্যান্য দেশে গিয়ে নিজের গবেষণা তুলে ধরার ইচ্ছা তার অনেকদিনের। গত বছর ফেলোশিপ পেয়ে যাওয়ায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি একাডেমিক কনফারেন্সে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হলেন। জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি বিশ্বের সাতটি দেশের মুসলমানদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন।
মামফ্রড লোকমুখে শুনেছেন যে, ট্রাম্প নাকি ব্রিটেনের মুসলিম শিক্ষকদের পছন্দ করেন না। ব্রিটিশ মুসলিম শিক্ষকরা নাকি তাদের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে খেপিয়ে তোলে। এও শুনেছেন, ব্রিটিশ মুসলিম পর্যটকদের যুক্তরাষ্ট্রে সফরের সময় নাকি মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাসওয়ার্ড দিতে বলা হয়। এমত অবস্থায় মামফ্রডের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন হয় যায়।
 
তিনি বলেন, ‘আমি কোনো কনফারেন্সে যেতে চাই না। যেখানে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় আমাকে আলাদা করে রাখা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সময় আমি ‘ঠিক আছি’ এটি ভাবতে পারবো না। আমি কখনোই সেখানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবো না। এটাও ভুলতে পারবো না যে আরেকজন মুসলমান হওয়ায় তাকে এখানে আসতে দেওযা হয়নি। এটা অন্যায়।’
একই কারণে সারা বিশ্বে হাজার হাজার অধ্যাপক এখন যুক্তরাষ্ট্রে আসতে চাইছেন না। দিন যতোই যাচ্ছে এ তালিকা ততোই লম্বা হচ্ছে। কানাডার একটি স্কুল তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী এলাকায় শিক্ষা সফরের আয়োজন করতো। টাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক কড়াকড়ির জন্য তারা আর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যেতে চাইছেন না।
ফিলাডেলফিয়ায় একটি বড় কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছে। যা থেকে ৭০ লাখ ডলার আয় হতে পারতো। কিন্তু এসব কড়াকড়ির কারণে তারা কনফারেন্সটি শেষ মুহূর্তে বাতিল করেছে। নিউ ইয়র্ক পর্যটন কর্তৃপক্ষ  প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে আশা করেছিল, এ বছর সেখানে চার লাখ পর্যটক আসবে। তবে এখন সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে করা হেচ্ছে, চলতি বছর সেখানে তিন লাখের মতো পর্যটক আসতে পারে।  এভাবে চলতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পযটন শিল্পে ধস নামতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.