173442

পর্যটকদের ‘কারাগার’ সান পেদ্রো!

নূসরাত জাহান: বছর বিশেক আগে বলিভিয়ার ‘কুখ্যাত’ সান পেদ্রো কারাগারকে পর্যটক কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই এ স্থানে নিয়ে পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। পর্যটকরা এখানে কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারেন। তবে থাকতে হয় কয়েদির মতো। অর্থের বিনিময়ে কেউ কয়েদি জীবনের স্বাদ পেতে চাইলে সান পেদ্রোতে আসতে পারেন।

 

কয়েদি জীবন নিয়ে লেখক রাস্তি ইয়ং ‘মার্চিং পাওডার’ নামে একটি বইও লিখেছেন। সাবেক এক বন্দির কয়েদি জীবন নিয়ে এর কাহিনি গড়ে ওঠেছে। এ কাহিনি নিয়ে একটি ডকুমেন্ট্রিও নির্মিত হয়েছে।
সান পেদ্রোর সাবেক বন্দি থমাস ম্যাকফাদেন বলেছেন, ‘এখানে আসার পর কেমন যেসন ভয় ভয় লাগছির। তবে আমি বারবার বলিভিয়ায় আসতে চাই। কারণ এখানেই আমার ও রাস্টির মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক এখানেই তৈরি হয়েছে।’
কারাগারের বন্দিরা তাদের বাননো জিনিসপত্র বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। এখানে যারা কয়েক সপ্তাহের জন্য থাকেন তাদেরও তাই করতে হয়। আবাসন ব্যবসায়ীদের মতো পর্যটকদের কাছে কারাগারের একটি সেল বিক্রি করা হয়। এ কারাগারের ভেতর বন্দিদের সন্তানদের জন্য স্কুলও রয়েছে।
২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া ম্যাকফাদেন এখন তানজানিয়াতে মুরগির খামার করেছেন। তবে তার জীবন পাল্টে গেছে রাস্টির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর। রাস্টির সঙ্গে তার এখন যোগাযোগ নেই। তবে তাকে ভালোবেসে ম্যাকফাদেন তার এক সন্তানের নাম রাস্টি রেখেছেন।


১৯৯৭ সালে সান পেদ্রোকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই এখানে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। পর্যটকরা টাকা দিয়ে এখানে প্রবেশ করে। অনেকে টাকা দিয়ে কারাগারে কয়েক সপ্তাহ থাকতে চায় এবং বন্দিদের মতো জীবন যাপন করেন।
ব্রিটিশ পর্যটক লেডিদা ডকিং সান পেদ্রোতে একবার নয় অনেকবার এসেছেন। ২০০৮ সালে এখানে প্রথম ঘুরতে আসার পর বলিবিয়ার সাবেক এক বন্দির দেখা তার হয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গেই গাটছড়া বাধেন লেডিদা। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আলোচনা শুরুর পর আমরা বুঝতে পারি যে বলিভিয়ার জেলে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।’ এই দম্পতির একটি কুকুর আছে। যার নাম পেদ্রো।


কারাজীবনের স্বাদ নিতে টাকা দিয়ে বন্দিদের মতো জীবন যাপনের খারাপ দিকও রয়েছে। এ নিয়ে লেডিদা বলেন, ‘আমি এখনো কারাগারে কাটানো সময় নিয়ে বিভ্রান্তিতে থাকি। এখনও সেই সময় নিয়ে চিন্তা করি। তিন সপ্তাহের কারা জীবনে আমি প্রতিদিন ভাবতাম কেন এটা করলাম? ভিন্ন অভিজ্ঞার জন্য এটা ঠিকই আছে। তবে আমি সবাইকে বলবো এ ধরনের অভিজ্ঞতা না নেওয়াই ভালো।’
সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.