173469

আফগানিস্তানে কতটা সফল আইএস?

নূসরাত জাহান: ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে আফগানিস্তানের খোরাসান এলাকা দখলে নেয় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা। আরব বিশ্বের বাইরে এটাই ছিল তাদের প্রথম পা রাখা। আফগানিস্তানে উপস্থিতি জানান দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে হেলমান্দ, জাবুল, ফারাহ, লাগোর ও নানগহর প্রদেশে তারা ছড়িয়ে পড়ে। তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায়ও এটাই ছিল আইএর-এর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া। তালেবান ও আল-কায়েদার পর কোনো জঙ্গি দলের সরব উপস্থিতি ছিল আফগানিস্তানে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে তারা কতটা সফল হতে পেরেছে এখানে।

শুরুতে তালেবানদের হটিয়ে তাদের জায়গা শক্তপোক্ত করা ছাড়ও স্থানীয়দের সমর্থন লাভের চেষ্টা করে। এছাড়া রাজনৈতিক ঘাঁটি করারও চেষ্টা করে। ২০১৫ সালের প্রথম অধর্কে আইএস নানগহর প্রদেশের একটা বড় অংশ দখলে নিয়ে তাদের রাজধানী ঘোষণা করে। কারণ এ এলাকার সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে। এখানে তাদের অবস্থান শক্ত করতে পারলে পাকিস্তানে প্রবেশ করাও তাদের জন্য সহজ হবে। বর্তমানে আইএস আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করছে। ওই এলাকার সঙ্গে মধ্য এশিয়ার দেশ, চেচেন ও চীনের বিদ্রোহী উইঘর মুসলমানদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারবে। তবে আফগান ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর অভিযানের কারণে তারা সেভাবে শক্ত হয়ে অবস্থান নিতে পারছে না। এরই মধ্যে আইএস নানগহর ও কুনার প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

আফগানিস্তানের আইএসয়ের সরব উপস্থিতি প্রকাশে পর মার্কিন বিমান হামলায় তাদের নেতা হাফিজ সাএয়দ খানসহ কয়েকশ’ সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। মার্কিন জেনারেল জন নিকলসন বলেন, তাদের ও ন্যাটো বাহিনীর ধারণা আফগানিস্তানে আইএসয়ের এক থেকে পাঁচ হাজার সদস্য রয়েছে। এ সংখ্যা বর্তমানে তিন হাজানে নেমে এসেছে। আইএসয়ের মোট সদস্যের ৭০ শতাংশই পাকিস্তানি তালেবান। তবে আফগান বাহিনীর ধারণা, ৮০ শতাংশ আইএস সদস্যই পাকিস্তানি।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের আইএসয়ের ভবিষ্যত কেমন হবে তা নির্ভর করছে সিরিয়া ও ইরানের তাদের অবস্থান কেমন থাকবে তার ওপর। পশ্চিমা ও আফগান সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের আর্থিক অবস্থা বেশ ভালো। এখানকার আইএসয়ের সঙ্গে দলটির শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগও রয়েছে। দলটি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় তাদের শাখা স্থাপনেরও চেষ্টা করছে। এজন্য দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কাজাখস্তান, কিরগিস্তান, পাকিস্তান, তাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের তাদের হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী ছড়িয়ে দিয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তারা তাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছে। ফলে এ এলাকার দেশগুলো তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।

আফগানিস্তানের আইএস কার্যত ব্যর্থ হওয়ার পর পুনরায় মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থান শক্ত করার ওপর নজর দিয়েছে। আত্মঘাতী ও গেরিলা হামলা চালিয়ে সেখানে ত্রাস সৃষ্টি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.