173270

মল, বমি, লালা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার

খাবারের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে রান্নার আগে সবজি, মাছ, মাংস ভাল করে ধুয়ে নিই আমরা। ঝকঝকে রাখি রান্নাঘর, ডাইনিং প্লেস-ও। কিন্তু জানেন কি বাজার থেকে আমরা এমন কিছু সুস্বাদু খাবার কিনি যা তৈরি কী ভাবে হয়েছে জানলে আপনি চমকে যাবেন। এটাও হতে পারে যে আপনার সাধের খাবারটিকে হয়তো দ্বিতীয়বার আর কিনলেনই না! যার কোনওটা হয়তো কোনও প্রাণীর বমি, আর কোনওটা হয়তো তৈরি করতে লাগে মানুষের মল।

কপি লুয়াক: বিশ্বের সবচেয়ে দামি কফি। এই কফি বীজের অম্লতা হ্রাস করে সুস্বাদু করে তুলতে গন্ধগোকুলকে তা খাওয়ানো হয়। তাদের খাদ্যনালীতে কফি বীজ হজম হয় না। উপরন্তু খাদ্যনালীর উৎসেচক কফি বীজের অম্লতা, প্রোটিন এবং ক্যাফেইনের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে স্বাদ বাড়িয়ে তোলে। এরপর গন্ধগোকুলের মল থেকে ওই বীজ সংগ্রহ করে তৈরি হয় কফি।

আন কোনো কুরো বিয়ার: জাপানের জনপ্রিয় এই বিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল কফি বীজ।কফি বীজের স্বাদ বাড়ানোর জন্য কপি লুয়াকের মতো এখানেও প্রথমে হাতিকে তা খাইয়ে দেওয়া হয়।৩৩ কিলোগ্রাম কফি বীজ খাওয়ালে মাত্র ১ কিলোগ্রাম বীজ হাতির মলের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসে। যা তারা সম্পূর্ণ হজম করতে পারে না। সেই বীজ দিয়েই তৈরি হয় এই বিয়ার।

বেবি পুপ সসেজ: সসেজ আমাদের অনেকেরই প্রিয়। তবে এই সসেজ প্রস্তুত করতে কী লাগে জানেন? এই সসেজ বানানোর জন্য এক ধরণের ব্যাকটিরিয়া কাজে লাগান বিজ্ঞানীরা। যা শিশুদের মলে পাওয়া যায়।

শিকা: দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজে এই খাবারের বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এটা একটা ঐতিহ্যবাহী খাবার।ভুট্টাবীজ দিয়ে তৈরি বিশেষ এই খাবার বানানোর আগে বীজগুলোকে শিকা কর্মীরা নিজের লালা দিয়ে সিক্ত করে থাকেন। লালায় উপস্থিত উৎসেচক ভুট্টাবীজের ফারমেন্টেশনে সাহায্য করে।

মধু: মধুর কথা তো সকলেই জানেন। অতি সুস্বাদু খেতে এই মধু কিন্তু আসলে মৌমাছির ‘বমি’।

শেল্যাক: সাধারণও কোনও কিছু উজ্জ্বল করার কাজে ব্যবহৃত হয় প্রাণীজাত এই উপাদানটি।এই নামটির সঙ্গে অপরিচিত হলেও আমরা তা সকলেই খেয়েছি।শেল্যাক দিয়ে ক্যান্ডি বা চকোলেটের আস্তরণ তৈরি করা হয়।এই উপাদানটি লাক্ষা কীটের লালাগ্রন্থি থেকে নির্গত হয়।

কুচিকামি নো সেক: জাপানের এই পানীয় রাইশ ওয়াইন নামেও পরিচিত।চালের শর্করাকে ভাঙার জন্য বর্তমানে আসপারজিলাস নামে এক ধরণের ছত্রাক ব্যবহার করা হয়।আসপারজিলাসের ব্যবহার সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা অবগত হওয়ার আগে তাতে মানুষের লালা দেওয়া হত।

ইয়ান ও: ঈষৎ হলুদ রঙের এই বস্তুটি হল পাখির বাসা। অনেকটা চড়ুইয়ের মতো দেখতে সুইফ্টলেট পাখিটি নিজের লালাগ্রন্থির ক্ষরণ থেকে বাসা বানায়। হাই-প্রোটিন যুক্ত এই উপাদান বিভিন্ন স্যুপ, মিষ্টিতে কাজে লাগে।

পান্ডা ডাং গ্রিন টি: নাম থেকেই আন্দাজ করা যায় খাবারের প্রকৃতি। বাঁশ গাছ পান্ডা প্রাণীদের খুব পছন্দের খাবার।যার মাত্র ৩০ শতাংশ হজম করতে পারে তারা। বাকি পুষ্টিগুণ মলের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।চিনের সিংচুয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেই মলকেই চা চাষে সার হিসাবে ব্যবহার করেন। এতে ক্যানসার প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে বলে গবেষকরা জানান।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.