171432

চশমা আগে কেমন ছিলো

সাইফ নাসির : চশমার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। তবে কতটা প্রাচীন সেটা সম্পর্কে ধারণা করা সহজ নয়। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য চোখে কাচের ব্যবহারের লিখিত প্রমাণ রয়েছে। রোমান সম্রাট নিরোর একজন শিক্ষক ওই সময়ের বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনার সঙ্গে দূরের জিনিস পরিষ্কারভাবে দেখার জন্য জলমিশ্রিত এক ধরনের কাচ চোখে লাগানোর কথা বলেছেন। রোমান গ্ল্যাডিয়েটরসদের লড়াই উপভোগ করতে গিয়ে নিজের আসনে বসে রোমান সম্রাট নিরো বিশেষ কাচ চোখে লাগাতেন।
সত্যিকারের চশমা বলতে যা বোঝায়, তা প্রথম প্রচলিত হয় ইতালিতে দ্বাদশ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। ওই সময় চোখে আতশী কাচ লাগিয়ে ছোট জিনিসকে দৃষ্টিসীমায় নিয়ে আসার জন্য চোখে চশমা ব্যবহার করার নজির রয়েছে ইতিহাসে। ১২৮৬ সালের দিকে ইতালিতে প্রথম চশমা তৈরি হয়েছিল। জিওর্দানো দা পিসা নামের এক ব্যক্তি প্রথমবারের মতো চশমা তৈরি করেছিলেন। দা পিসার তৈরি চশমার উদ্দেশ্য ছিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার প্রতিকার

কাঁচ ব্যাবহার করে ছোট জিনিস বড় করে দেখার নজির রয়েছে প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার চিত্রিত হায়ারোগ্লিফিকসে। তবে সেটা আজকের দিনের চশমার মতো ছিলো না। সেটা হাতে নিয়ে দেখতে হতো। এরপর দেখার সুবিধার জন্য মানুষ সেটাকে চোখেই লাগিয়ে নিলো। তবে সেটা ছিলো একচোখে লাগানো চশমা। একটা স্টীল ফ্রেমের মধ্যে থাকতো কাঁচ। চোখের কোটরে স্টীল ফ্রেমটি ঢুকিয়ে চোখমুখ কুচকে সেই চশমাকে ধরে রাখতো হতো। এটাও সুবিধাজনক না। তাই নাকে বসানো দুই চোখের চশমাই আবিস্কার হলো। তবে সেই চশমা চেইন দিয়ে মাথার সাথে বেঁধে রাখতে হতো। চেইনে বাঁধা চশমা চললো অনেকদিন। তারপর একদিন মানুষ বুঝতে পারলো কানটা ফাঁকাই থাকে। তাই কানের পিছনে অাংটা দিয়ে চশমা ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হলো। এটাই মূলত আধুনিক চশমা।

আধুনিক চশমার উদ্ভাবক হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে গিরোলামো সাভোনারোলা নামের এক ইতালীয়কে। তিনি ১৭২৭ সালে বর্তমান সময়ের চশমার প্রাথমিক নকশাটি তৈরি করেন। তার আগে দুই চোখের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা এড়াতে চোখের সামনে কাচ ধরা হতো। সাভেনারোলার নকশাটিকে স্থির রেখে এরপর চশমার নকশা নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। ধীরে ধীরে এটি পায় আধুনিক চেহারা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.