কত বছর আগে প্রথম হেসেছিল মানুষ?

দিন-ক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা এসব ব্যাপারে সম্ভব নয়। তাও বিস্তর গবেষণার পর মোটামুটি একটা সময়সীমা বের করতে পেরেছেন গবেষকরা। তার সূত্র ধরে অবশেষে জানা গেছে, কত বছর আগে প্রথম হেসেছিল মানুষ!

গবেষকরা বলছেন, আনুমানিক ৩ কোটি বছর আগে। এ সেই সময়ের কথা যখন পুরনো পৃথিবীর বানর বা ক্যাটারিনদের থেকে ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যাচ্ছে আমাদের পূর্বপুরুষরা। এপ বা হোমিনয়েডদের মধ্যে ধীরে ধীরে কমে আসছে বানরের মতো গাছে গাছে ঘুরে বেড়ানোর প্রবৃত্তি। একটু একটু করে দেখা যাচ্ছে মানবিক লক্ষণসমূহ। তারা পৌঁছে যাচ্ছে হোমিনিড বা মানুষ হওয়ার দিকে। এরকম একটা সময়েই মানুষ প্রথম হেসেছিল। সেরকমটাই অন্তত দাবি করেছেন জাপানের কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল।

তবে, সেই হাসি ছিল অনেকটাই মুখের পেশির প্রসারের মতো। যাকে অভিব্যক্তি বললেও বড় একটাও ভুল হয় না। প্রাণ খুলে হাসা তখনও শেখেনি আদিম মানুষ। তাই কিয়োতোর গবেষকরা একে বলছেন ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’ বা স্বতস্ফূর্ত হাসি। আপনা-আপনিই পেশির প্রসারণে যা ফুটে উঠেছিল আদিম মানুষের ঠোঁটে। কিয়োতোর গবেষকরা দাবি করেছেন, শিম্পাঞ্জি, যাদের সঙ্গে কি না স্তন্যপায়ীদের মধ্যে মানুষের সব চেয়ে বেশি মিল দেখা যায়, তাদের মুখেও দেখা যায় এই ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’! পাশাপাশি, গবেষণাগারে ক্ষুদ্রাকৃতি ম্যাকাক বানরদের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েও তাঁরা দেখেছেন যে তাদের মুখেও দেখা যায় ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’। তার থেকেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা যে মানুষ হোমিনয়েড দশায় প্রথম হেসেছিল।

গবেষকরা আরও বলছেন, এই ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’-এর ধরন একেবারে মানবশিশুর হাসির মতন! মানবশিশু যখন ঘুমের মধ্যে হাসে, সেই সময় যখন তার ঠোঁটের এক কোণ বেয়ে লালার ধারা নেমে আসে কখনো কখনো, ম্যাকাকদের ক্ষেত্রেও হুবহু তাই দেখা গেছে। তবে, শিম্পাঞ্জিদের ক্ষেত্রে কিন্তু ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’ শুধুই হাসি নয়। অনেক সময় ব্যথা পেলে বা বিরক্ত হলেও তাদের মুখের পেশি প্রসারিত হয় যা অনেকটা হাসির মতোই দেখতে লাগে।

অর্থাৎ, বেশ বড়-সড় একটা বিবর্তনের পর মানুষ প্রাণ খুলে হাসতে শিখেছে। ‘স্পনটেনিয়াস স্মাইল’ থেকে রপ্ত করে ফেলেছে মেকি হাসিও- এমনটা বললেও খুব একটা অন্যায় হবে না!

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.