১৮ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের উৎসবে মাতলো পাকিস্তান
হাসান আলীর গতিঝড়ে অনায়াসে জয় তুলে নিলো পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম দিনের রোমাঞ্চ বাড়িয়ে ২০০৩ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটা সিরিজ জয় পাকিস্তানের।
করাচির প্রথম টেস্ট ৭ উইকেটে জিতেছিল পাকিস্তান। আর আজ (সোমবার) রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্ট স্বাগতিকরা জিতলো ৯৫ রানে। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করলো পাকিস্তান। ১৮ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উৎসবে মাতলো তারা।
অথচ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে জয়ের পাল্লা হেলে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে। প্রোটিয়াদের টেস্ট নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে থাকা এইডেন মারকম ও তেম্বা বাভুমার ব্যাটে জয়ের পথেই ছিলো প্রোটিয়ারা। কিন্তু দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েই পাকিস্তানের পেসাররা প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন। বিশেষ করে হাসান আলীর বোলিং তোপে পড়ে ৩৩ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া এই পেসার দ্বিতীয় ইনিংসেও নিয়েছেন ৫ উইকেট। ম্যাচে মোট ১০ উইকেট নিয়ে স্বাভাবিকভাবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার হাতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য ছিল ৩৭০ রান। ১ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে পঞ্চম দিন শুরু করে চাপে পড়ে সফরকারীরা। দ্রুত ফিরে যান রাসি ফন ডার ডুসেন (৪৮) ও ফাফ ডু প্লেসি (৫)। ওই চাপ সামলে প্রোটিয়াদের আশা উজ্জ্বল হয় মারকম ও বাভুমার ব্যাটে। মারকম তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। উপমহাদেশে এটা তার প্রথম সেঞ্চুরি। এই সেঞ্চুরিরীর সুবাদে সাম্প্রতিক সময়ের ব্যর্থতাও কাটিয়েছেন তিনি। খেলেছেন ২৪৩ বলে ১০৮ রানের ইনিংস। আর বাভুমা করেন ৬১ রান।
চতুর্থ উইকেটে তাদের ১০৬ রানের জুটিতে ৩৭০ রানের লক্ষ্যটাও সহজ হয়ে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। কিন্তু নতুন বল হাতে পেয়েই সব তছনছ করে দেন হাসান আলী । তার আগুনঝরা বোলিংয়ে ৩ উইকেটে ২৪১ রান থাকা প্রোটিয়ারা অলআউট হয়ে যায় ২৭৪ রানে। চা বিরতির ৪১ মিনিট আগেই শেষ রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট!
এ নিয়ে সর্বোশেষ পাঁচ টেস্ট সিরিজের চারটিতে হারলো দক্ষিণ আফ্রিকা। আর গত ১৩ টেস্টে এটা দশম হার। পাকিস্তানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর একটা লম্বা বিরতি পাচ্ছে তারা। অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করায় আপাতত লাল বলের ক্রিকেটে খেলা নেই তাদের।
হাসানের সঙ্গে বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি। বাঁহাতি পেসার ৫১ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪ উইকেট। আর ১ উইকেট নিয়েছেন ইয়াসির শাহ। হাসান ম্যাচসেরা হলেও সিরিজসেরা হয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২৭২ ও ২৯৮ (ফাহিম আশরাফ ৭৮, বাবর আজম ৭৭, ফাওয়াদ আলম ৪৫; নকিয়া ৫/৫৬, মহারাজ ৩/৯০)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৯১.৪ ওভারে ২৭৪ (মারকম ১০৮, বাভুমা ৬১, ফন ডের ডুসেন ৪৮, উইয়ান মুল্ডার ২০, এলগার ১৭; হাসান ৫/৬০, শাহীন ৪/৫১)।
ফল: পাকিস্তান ৯৫ রানে জয়ী।
সিরিজ: দুই ম্যাচের সিরিজ পাকিস্তান ২-০তে জয়ী।
ম্যাচসেরা: হাসান আলী।
সিরিজসেরা: মোহাম্মদ রিজওয়ান।