সাদা মেঘের ভেলায় শরতের আগমন
‘গণিতে গণিতে শ্রাবণ কাটিল, আসিল ভাদ্র মাস, বিরহী নারীর নয়নের জলে, ভিজিল বুকের বাস’ কবি জসীমউদ্দীন নিজের কবিতার মাধ্যমে এভাবেই শরৎ ঋতুকে স্বাগত জানিয়েছেন। সবুজ শ্যামলিমায় পরিপূর্ণ আমাদের এ দেশ অপরুপ ঋতু বৈচিত্র্যের আধার। অপূর্ব রুপ এবং অফুরন্ত সম্ভার নিয়ে এখানে একের পর এক আবর্তিত হয় ছয়টি ঋতু। বর্ষার অবিশ্রান্ত রিমঝিম গানের অলস বিধুর মনথরন যখন ক্লান্তিতে মনকে বিষন্ন করে তোলে, ঠিক তখন শরৎ তার স্নিগ্ধরুপ মাধুর্য নিয়ে হঠাৎ আলোর মতো নীল আকাশে ঝলমল করে হেসে ওঠে।
গতকাল আকাশে রোদ্র-মেঘের লুকোচুরি জানান দিয়েছে তার আগমনী বার্তা। প্রকৃতির মালিন্য মুছে দিতে মেঘের সিংহবাহনে এলো সে ‘মধুর মুরতি’ নিয়ে। শরতকে চেনা যায় প্রকৃতির মধ্যে তার স্বল্প আয়োজনের জন্য। শরতের সম্ভার ঐ শিশিরাশ্রু শেফালিকা, কাশমেঘ; আর আগমনী উত্সবে তার সমাপ্তি।
ভাদ্র মনকে উদ্বেলিত করে। প্রকৃতির সবুজ ছড়িয়ে পড়ে মাঠে-ঘাটে। এ স্নিগ্ধরূপ তারুণ্যকে উচ্ছ্বসিত আনন্দে ভাসার উদ্বেগ সৃষ্টি করে। প্রকৃতি তার ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিতে চায় সকল মনকে। শরতের সেই ভালোবাসার মনে দোলা দিয়ে যায়।
শরত্কালের মধ্যেই যেন বাংলাদেশের হূদয়ের স্পর্শ পাওয়া যায়। নদীর তীরে তীরে কাশফুলের শুভ্রতার প্লাবন, মাঠে মাঠে সবুজের মেলা; এত নীল আর এত সাদার একত্র সমাবেশ কেবল শরতেই দেখা মেলে এই রূপসী বাংলায়। শহরের যান্ত্রিক জীবনে এর রূপ দেখার সময় যেন নেই অনেকেরই।