জীবিকা নির্বাহ চলে ইঁদুরের গর্তে থাকা ধান দিয়ে
ডেস্ক রিপোর্ট : ক্ষুধার রাজ্যে পূর্ণিমার চাঁদও যেন ঝলসানো রুটি । কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার একটি লাইন যেন আদিবাসীদের বাস্তব জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এই সময়ে চলছে ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদের আমন ধান কর্তনের কাজ। গৃহস্থরা ধান কেটে নেয়ার পর ক্ষেতের গর্তে ধান নিয়ে ইঁদুরের সঙ্গে নিরন্তর লড়াই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের। বছরের ৩ থেকে ৪ মাসের খাবার মজুদ রাখার জন্য তাদের ভরসা ইঁদুরের গর্তে রাখা ধান।
বৃহস্পতিবার (নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলা খোচাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত বিস্তীর্ণ মাঠে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নারী ও শিশুরা শাবল চালিয়ে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধান বের করছে।
খোচাবাড়ী জগন্নাথপুর এলাকার মার্টিনা হাঁসদার বলেন, আমন মৌসুম এলেই আমরা এসব গর্তে থাকা ধান উঠাই। পরবর্তীতে সংগ্রহ করা ধানকে চাল করে চলে তিন থেকে ৪ মাসের খাবার।
রাম্পা মুর্মু’সহ ধান সংগ্রহে আসা একাধিক আদিবাসী নারীরা বলেন, সকালে দল বেঁধে বের হয়ে বিকালে ফিরে যাই ঘরে। এ সময়টাতে ইঁদুরের গর্ত গুলো খুড়ি অনেক গর্তে ধান থাকে না। আবার ভাগ্য ভালো হলে এক গর্তেই মিলে যায় আধা মণ ধান। তখন বড় আনন্দ লাগে।” তবে, গর্ত খুড়ার কাজটি যেমন কঠিন তেমন ভয়েরও। কারণ, অনেক সময় গর্তের ভেতরে অন্ধকারের জন্য কিছু দেখা যায় না।ফলে গর্তে ইঁদুরের বদলে সাপ থাকে তা বোঝা যায় না। তাই গর্তে খুব সাবধানে হাত ঢুকাতে হয়।
কেউ কেউ পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান মজুদ রেখে বাকী অর্ধেক ধান বিক্রি করে সংসার চালান বলে জানান তারা।