275840

দুই বান্ধবীর ‘মজা’য় সাবেক লিভারপুল স্ট্রাইকারের বিয়ে ভাঙার উপক্রম

বেচারা অ্যান্ডি ক্যারল! পার্টিতে একটু মৌজ মাস্তি করেছেন।  পান করেছেন গলা পর্যন্ত।  নেশায় এতটাই চুর ছিলেন যে নিজের কামরা পর্যন্ত যাওয়াই কঠিন!  অগত্যা দুজন নারী সঙ্গীর কাঁধে ভর করে কামরায় ফেরেন।  এঁদের একজন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতেই বাধল বিপত্তি।  এরপরই ক্যারলের সুখের ঘরে দুঃখের আগুন!

বেশ ভালো সম্ভাবনা নিয়ে ইংলিশ ফুটবলে আসা ক্যারল খেলেছেন নিউক্যাসল ও লিভারপুলের মতো ক্লাবে।  সেভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি।  ওয়েস্ট ব্রমউইচের হয়ে এ মৌসুম খেলেই তাঁর ক্লাব ছাড়ার কথা।  কিন্তু নতুন ক্লাবের পেছনে ছুটবেন কি, ক্যারলের এখন দাম্পত্যজীবন টেকানোই দায়।

‘দ্য অনলি ওয়ে ইজ এসেক্স’ টিভি রিয়েলিটি শো করে ইংল্যান্ডে তারকাখ্যাতি পাওয়া বিলি মাকলোর সঙ্গে ক্যারলের প্রেমের সম্পর্ক ২০১৪ সাল থেকে।  দুজনের ভালোবাসায় পৃথিবীতে এসেছে দুটি সন্তানও।  এত দিনের প্রেম ভালোবাসাকে বিয়েতে পরিণতি দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন দুজনে।  কিন্তু এখন বিলি মাকলো নাকি বেঁকে বসেছেন।  দুবাইয়ে সেদিন রাতে কী ঘটেছিল, তা খোলাসা করে না বললে এবং সেই রাতের সব ছবি তাঁকে না দেখালে ক্যারলের প্রেম জলে ডুবল বলে!

ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘সান’ জানিয়েছে, গতকাল ক্যারলকে এ নিয়ে সাফ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মাকলো।  ঘটনার পরিষ্কার ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি এবং ‘সব ছবিও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া’র নির্দেশ দিয়েছেন ক্যারলকে।  ওয়েস্টব্রমউইচ স্ট্রাইকার তা না মানলে বিয়েটা নাকি আর হবে না।  মাকলোর ঘনিষ্ঠরা সানকে জানিয়েছেন, ক্যারলের বাসা থেকে তিনি এসেক্সে নিজের মা–বাবার কাছে চলে গেছেন।  তাঁর এক বন্ধু সানকে বলেছেন, বিলি মনে করে, ‘বিষয়টি যত খারাপই হোক না কেন, এটাই একমাত্র পথ (সেদিন রাতের ঘটনা সব খুলে বলা এবং সব ছবি তার হাতে তুলে দেওয়া)।’

বিলির আরেক ঘনিষ্ঠজন সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‘বিলি অ্যান্ডিকে বিশ্বাস করেছে এবং সব সময় তার পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন সে বুঝতে পারছে না কী করা উচিত।  সে খুব রেগে আছে এবং হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল থেকে অ্যান্ডিকে মুছে ফেলেছে। সে এখনো তার (অ্যান্ডি) পাশেই আছে, কিন্তু সময়টা তো খুব কঠিন।’

অ্যান্ডি ক্যারল ও বিলি মাকলো দুজনেই সমবয়সী।  ৩৩ বছর বয়সী এই জুটি দুই সপ্তাহ পরই বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে রেখেছিলেন।  বিয়ের আগে শেষ ব্যাচেলর পার্টিটি দুবাইয়ের এক হোটেলে করেছেন ক্যারল।  সেখানেই ঘটেছে বিপত্তি। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে পার্টিতে মদ্যপান শেষে আর স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না ক্যারল।  এ সময় তাঁকে তাঁর হোটেল কামরায় পৌঁছে দেন ফিটনেস ইনস্ট্রাক্টর ফোয়েবে রোব এবং বার ম্যানেজার টেলর জেন উইলকি।  দুজনেই বেশ পরিচিত মুখ।

‘ফেয়ারমন্ট পাম’ নামে রাতপ্রতি ৫০০ পাউন্ড ভাড়ার সেই স্যুটে যাওয়ার পর চেতনা ছিল না ক্যারলের।  খালি গায়েই অচেতন হয়ে বিছানায় পড়ে ছিলেন তিনি।  এ সময় তাঁর সঙ্গে ছবি তোলেন ফোয়েবে রোব ও টেলর জেন উইলকি।  টেলর বিছানায় বসে ছিলেন।  দুজনেই নিজেদের স্ন্যাপচ্যাটে ছবি পোস্ট করেন।

টেলর উইলকি সম্ভবত বুঝতে পেরেছিলেন, এসব ছবি বিতর্কের ঝড় তুলতে পারে।  তাঁর ব্যাখ্যা, ‘আমরা মাতাল ছিলাম।  অ্যান্ডি ক্যারল বিছানায় অচেতন হয়ে পড়ে ছিল।  কোনোরকম যৌন সম্পর্ক হয়নি।  পার্টি শেষে আমরা সবাই তার সঙ্গে হোটেলে ফিরে যাই।  অ্যান্ডির সঙ্গে আমি এবং এক বন্ধু ছিল।  আমি বা আমরা তার সঙ্গে ঘুমোইনি।  পুরো দিন-রাতই মদ্যপান করে কেটেছে। আমরা তার সঙ্গে হোটেল কামরায় ফেরার পর গান শুনেছি।  অ্যান্ডি বিছানায় গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে।  সকাল হওয়ার আগে আমরা চলে এসেছি।  আসার আগে মজা করে ছবিও তুলেছি।  এটা স্রেফ মজা ছিল।’

কিন্তু শনিবার অ্যান্ডি ক্যারল দুবাই থেকে ফেরার পরই বিলি মাকলোর প্রশ্নবাণের মুখে পড়েন।  এরপর অ্যান্ডির আগের ঘরের সন্তানসহ সবাইকে নিয়ে নিজের মা-বাবার বাসায় চলে যান।  এখন ক্যারলের সবকিছু ব্যাখ্যা করার পালা।

তবে ঘটনা যা-ই ঘটুক, একটি বিষয়ে ক্যারল নিশ্চিত ভালো শিক্ষাই পেয়েছেন।  মদ্যপানে সীমা লঙ্ঘন করতে হয় না।  ক্যারল সীমা লঙ্ঘন করেছিলেন বলেই তো অচেতন হয়ে পড়েন এবং তারপরই বিপত্তিটা ঘটেছে।  বেচারা!

 

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.