274706

মডেল পরিচয়ে পিয়াসা-মৌয়ের যত কীর্তিকলাপ!

পিয়াসা ও মৌ মডেল হিসেবে পরিচিত হলেও মিডিয়ায় তাদের তেমন কোনও কাজই আলোচনায় আসেনি।  মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে এ অঙ্গনে সফলতা পাননি।  তবে বিলাসী জীবনযাপন করতেন তারা।  নিজেদের পরিচয় দিতেন মডেল হিসেবে।  আর এই মডেল পরিচয়ের অন্তরালে মদ, ইয়াবাসহ নানান নেশাদ্রব্যের পসরা সাজিয়ে পার্টি করতেন তারা।  আর এসব পার্টিতে আমন্ত্রণ জানাতেন সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ও ধনী পরিবারের সন্তানদের।  ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতেন।  সেসব দৃশ্য কৌশলে ধারণ করা হতো গোপন ক্যামেরায়।  আর ওইসব ছবি, ভিডিওকে পুঁজি করে দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইল করতেন তাদের।  পিয়াসা ও মৌ এভাবে বছরের পর বছর ধরে বহু মানুষকে পথে বসিয়েছেন বলে পুলিশের একাধিক সূত্র থেকে বলা হয়েছে।

গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনায় উঠে এসেছে পিয়াসার নাম।  ২০১৭ সালে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ধর্ষণকাণ্ডের মূল হোতা হিসেবে স্বামী সাফাতের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসেন পিয়াসা।  যদিও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য পরবর্তীতে তাকে ডিভোর্স দেন সাফাত।

২০১৯ সালে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম চাঁদা দাবির অভিযোগে সাবেক পুত্রবধূ পিয়াসার বিরুদ্ধে মামলা করেন।  পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান পিয়াসা।  এখানেই শেষ নয়, তিনি তার সাবেক শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলাও করেন।  সেখানে নির্যাতন, হত্যার হুমকি ও গর্ভপাতের চেষ্টার অভিযোগ করেন পিয়াসা।  যদিও পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান আদালতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে পিয়াসার অভিযোগ মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন।

কয়েক মাস আগে রাজধানীর গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর যে মামলা হয়েছিল তাতেও পিয়াসার নাম ছিল।

পিয়াসার মতো মৌ এত আলোচিত ঘটনায় ছিলেন না ঠিকই, তবে তারা একই চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছেন পুলিশ।  তারা রাতের রানী বলেই সুপরিচিত।  একজনের ঠিকানা বারিধারা, অন্যজনের বসতি মিরপুর রোড সংলগ্ন ২২/৯ বাবর রোডের একটি বাসার নিচতলায়।  নিজের বাসার ভেতরে ড্রয়িং রুমের পাশেই একটি মিনি বার সাজিয়ে রেখেছিলেন মৌ।

পিয়াসা ও মৌয়ের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করার অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে।  সেই তদন্তের অংশ হিসেবেই তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। রোববার (১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পিয়াসার বারিধারার বাসায় অভিযান চালায়।  এ সময় তাকে আটক করা হয়। আজ সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে গুলশান থানায় (মামলা নং-৩) পিয়াসার বিরুদ্ধে মামলার পর ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।  শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমাম তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অন্যদিকে একই রাতে (১ আগস্ট) আরেক মডেল মরিয়ম আক্তার মৌয়ের (মৌ আক্তার) মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের বাসা থেকে অন্তত ১ ডজন বিদেশি মদ ও ৫ প্যাকেট ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  মোহাম্মদপুর থানায় (মামলা নং ১৪) মৌয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন পুলিশ।  তাকেও তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমাম।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.