274597

১৫জুলাই থেকে চলবে গণপরিবহন, বাসের টিকিট বিক্রি শুরু

করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দেশজুরে কঠোর লকডাউনে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল দূরপাল্লার যানবাহন। কিন্তু ঈদ সামনে রেখে লকডাউন শিথিল হওয়ায় ১৫জুলাই থেকে চলবে গণপরিবহন।  এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। প্রস্তুত করা হচ্ছে টিকিট কাউন্টার ও দুরপাল্লার বাসগুলো।  কিছু কিছু বাসের টিকিট অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে।

বুধবার থেকে প্রতিটি বাস কাউন্টারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।  রাত থেকে অনলাইনে পুরোপুরি শুরু হবে টিকিট বিক্রি।

আর তাতে পরিবহন শ্রমিকদের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ বৃহস্পতিবার থেকে ৮দিনের জন্য শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।  প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে গণপরিবহন।  এই সময়ে মানুষকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে।

এ নির্দেশনার পরই বাস চলাচলের প্রস্ততি শুরু হয়েছে।  এরই মধ্যে বাংলাদেশ বাস ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবার থেকে বাসের টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে।  এছাড়া চেষ্টা চলছে রাতেই অনলাইনে টিকিট ছাড়ার।  তা না হলে বুধবার থেকে এটাও চালু হবে।  তবে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ এ নীতিতে চালু হচ্ছে এবারের টিকিট বিক্রি।  অন্যান্য বছর যেভাবে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি করা হয়েছে, এই অল্প সময়ের মধ্যে এবার সেভাবে করা যাচ্ছে না।

ঈদ উপলক্ষে গণপরিবহন চালুর এই খবরে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে শুরু হয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা। চলছে কাউন্টার ও গাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ।  গাড়িগুলোর ব্যাটারি ও ইঞ্জিন পরীক্ষা করছেন শ্রমিকরা।  রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।  এ সময় কথা হয় কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে।  দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাস চালুর খবরে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন।

রাজধানীর গাবতলী ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রজ্ঞাপন জারির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে জড়ো হচ্ছেন।  নিজেদের কাউন্টারগুলো খুলে স্যানিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল দিয়ে পরিষ্কার করছেন।  ময়লা পরিষ্কার করে আবারও নতুন করে কাজ শুরু করার চেষ্টায় রয়েছেন তারা।  সবার মনে যেন এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।  তবে সাধারণ জনগণ গণপরিবহন চালুর বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।  তাদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে।

পরিবহন শ্রমিক জসিম বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে অনেক প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসে গাদাগাদি করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী চলাচল করেছে।

পরিবহন শ্রমিক রবিউল বলেন, বাস চললে আমরা পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কিছুটা খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবো।  আমরা করোনা দেখে ভয় পাই না।  আমরা লকডাউন দেখে ভই পাই, কারণ পেটে ভাত না থাকলে মাথায় কোনও কিছু কাজ করে না। রাস্তায় গণপরিবহন ছাড়া কিন্তু সব ধরনের যানবাহন চলছে এবং সেসব যানবাহনে যাত্রী পরিবহন হচ্ছে, লোকজন বেশি টাকা দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ রযয়েছে।  পরিবহন শ্রমিক হিসেবে আমার চাওয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার গাড়িগুলো যেন চলে।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে সাত দিন গণপরিবহন চালুর ঘোষণায় পরিবহন শ্রমিক-মালিক উভয় স্বস্তিতে।  আগামী সাত দিন গাড়ি চললে পরিবার নিয়ে অনেকটাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন।  স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুই সিটে একজন করে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।  এই সাতদিনের পর যেন পরিবহন চলাচল বহাল থাকে এই দাবিও তোলেন তারা।

 

 

 

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.