272407

জরিনার ঘরে ২ বাচ্চা, মন খারাপ কারিনার

কালো ভালুক বা এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ার। সাধারণত আবদ্ধ অবস্থায় এসব প্রাণী বাচ্চা প্রসব করতে পারে না। তবে আবাসস্থল মাটির সংস্পর্শে থাকলে সেখানে গর্ত খুঁড়ে বাচ্চা প্রসব করতে পারে স্ত্রী ভালুক।
এমন সুযোগ হাতছাড়া করেনি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের স্ত্রী ভালুক ‘জরিনা’। তার ঘরে এলো দুটি বাচ্চা। জন্ম নেয়া দুই বাচ্চাকে ঘিরে সবাই ব্যস্ত থাকায় মন খারাপ স্ত্রী ভালুক কারিনার।

বেষ্টনীতে থাকা চার পুরুষ ভালুকের সঙ্গী হিসেবে স্ত্রী ভালুক জরিনা ও কারিনাকে সংস্পর্শে রাখা হয়। এর মধ্যে সম্প্রতি দুটি বাচ্চা প্রসব করেছে জরিনা। যা সাফারি পার্কের ইতিহাসে কালো ভালুক প্রজননে বড় ধরনের সফলতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ এ প্রজাতির ভালুক এশিয়ার মধ্যে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে তথা বিপদাপন্নের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

জরিনার ঘরে আসা বাচ্চা দুটির চোখ ফুটলেও এখনো লিঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লিঙ্গ শনাক্তের জন্য অন্তত দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে পার্কের আরেক বেষ্টনীর পুরুষ ভালুক জ্যাকবনের দুই স্ত্রী মৌসুমি ও পূর্ণিমার সংসারে তিনটি ভালুক বাচ্চা জন্ম নেয়। যা সাফারি পার্ক তথা দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য সুখবর এবং বিরল ঘটনা ছিল। এবার জরিনার ঘরে জন্ম নেয়া দুই বাচ্চাকে ঘিরে তাদের লালন-পালনে পার্ক কর্তৃপক্ষের বেশ তোড়জোড় চলছে।

স্ত্রী ভালুক জরিনার বেষ্টনীর কাছে গিয়ে দেখা গেছে, দুই বাচ্চাসহ মা জরিনাকে বেষ্টনীতে থাকা স্ত্রী ভালুক কারিনা ও পুরুষ ভালুকগুলোর কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর গর্তের ভেতর ঢুকে গিয়ে দুই বাচ্চাকে বুকে আগলে রেখে দুধ খাওয়াচ্ছে মা জরিনা। এ সময় মানুষের গন্ধ পেয়ে দুই বাচ্চাকে গর্তের ভেতর রেখে একবার বেরোচ্ছে আবার ঢুকে পড়ছে। তবে কৌশলে ভালুকের দুই বাচ্চার ছবি সংগ্রহ করা হয়।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. তপন কুমার দে বলেন, কালো ভালুক বর্তমানে বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এসব প্রাণী নিশাচর ও একাকী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। মূলত জঙ্গলাকীর্ণ খাড়া পাহাড়ই তাদের অন্যতম আবাসস্থল।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি বনাঞ্চলে মাঝে-মধ্যে এসব প্রাণীর দেখা মেলে। দেখতে কুচকুচে কালো ও দেহের বুকের অংশে ভি আকৃতির দাগ রয়েছে। উচ্চতায় চার থেকে ছয় দশমিক পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর ওজন ৬ মাস পরবর্তী সর্বনিম্ন ৫০ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ২৮০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.