৯৩ খুন করে ‘মাত্র’ ৬ বছর সাজা খাটেন হাই প্রোফাইল সিরিয়াল কিলার
আমেরিকার ইতিহাসে হাই প্রোফাইল সিরিয়াল কিলার হিসেবে পরিচিত স্যামুয়েল লিটল ৮০ বছর বয়সে মারা গেছেন। বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। কারাগারের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এফবিআই তাকে হাই প্রোফাইল সিরিয়াল কিলার হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কারণ ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯৩ জন নারীকে খুন করেন। এতো দীর্ঘ সময় অপরাধমূলক কার্যক্রম চালানোর পরও মাত্র ৬ বছর জেল খাটেন তিনি। সর্বশেষ মাত্র তিন নারী হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন।
পড়াশোনা ছেড়ে যাযাবর জীবনযাপন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে বেড়ে ওঠা স্যামুয়েল লিটল। কিশোর বয়স থেকেই দোকানপাট লুট বা অ্যালকোহল-ড্রাগ কিনতে চুরি করাসহ সব অপরাধে জড়িয়েছেন। ১৯৫৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই দোকানপাট লুট, জালিয়াতি, মাদকদ্রব্য এবং কপাট ভেঙে দোকানে অবৈধ প্রবেশের জন্য গ্রেফতার হন তিনি।
আশির দশকের শেষের দিকে মিসিসিপি এবং ফ্লোরিডায় নারীদের হত্যার অভিযোগে স্যামুয়েল লিটলকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি। এ কারণে ছাড়া পেয়ে যান। এরপর গ্রেফতার হন ২০১৪ সালে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) বলছে, এরপর জেরায় স্যামুয়েল স্বীকার করেন, তিনি ৫০–এর বেশি মানুষকে খুন করেছেন। এফবিআইয়ের তদন্তে খুনের সংখ্যা ৯৩। স্যামুয়েল লিটলের শিকারে পরিণত হওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই ছিলেন নারী। ১৯৭০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে তিনি এতো লোক হত্যা করেন। কিন্তু কয়েক দশক পর্যন্ত খুনিকে শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্যামুয়েল লিটল মুষ্টিযোদ্ধা ছিলেন। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা স্যামুয়েল সহজেই মুষ্টিযুদ্ধে তার প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতেন। তিনি যাদের খুন করেন, তাদের প্রায় সবাই ছিলেন মাদকাসক্ত ও দেহ ব্যবসায় যুক্ত। অনেক ক্ষেত্রেই খুন হওয়া নারীকে কখনো শনাক্ত করা যায়নি বা খুনের ঘটনায় তদন্ত হয়নি। স্যামুয়েল যাদের খুন করেছেন, তাদের শরীরে ছুরিকাঘাত বা গুলির ক্ষতের মতো কোনো চিহ্ন পাওয়া যেত না। ফলে অতিরিক্ত মাদক গ্রহণ বা দুর্ঘটনাই তাদের মৃত্যুর কারণ বলে ধারণা করা হতো।
তবে স্যামুয়েল যখন ধরা পড়েন, তখন কারাগারের ভেতরে থেকে একে একে খুন করা ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় বলা শুরু করেন। এরপর অন্তত অর্ধশত ব্যক্তিকে খুন করার সঙ্গে তিনি যুক্ত বলে গত বছর নিশ্চিত করে এফবিআই। তদন্ত সংস্থাটি বলেছে, স্বীকারোক্তিতে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো ‘বিশ্বাসযোগ্য’।