270227

‘অভিশপ্ত নিদর্শন’ চুরি করেও ১৫ বছর পর ফেরত দিলেন চোর

পম্পেই নগরী লাভার নিচে চাপা পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস পর্বতের এই অগ্ন্যুৎপাত সম্পর্কে অনেকেরই নিশ্চয় জানা আছে। এই প্রাকৃতিক দুর্ঘটনায় মারা যায় হাজার হাজার মানুষ।

দীর্ঘ ১৫ বছর পর ইতালির পম্পেই প্রত্নতাত্ত্বিক পার্ক থেকে চুরি করা নিদর্শন ফিরিয়ে দিলেন এক কানাডিয়ান পর্যটক। নিদর্শনগুলোর মধ্যে ছিল দুইটি সাদা মোজাইক টাইলস, দুইটি অ্যামফোরার পাত্র ও একটি সিরামিক ওয়াল।

সংযুক্ত একটি চিঠিতে এই নিদর্শনগুলোর কারণে তার দুর্ভাগ্যের শুরু হয়েছে বলে জানান নিকোল নামের এই পর্যটক। তিনি চিঠিতে লিখেন, ‘আমি ইতিহাসের এমন একটি অংশ সংগ্রহে রাখতে চেয়েছিলাম যা কেনা সম্ভব নয়।

তিনি জানান, কানাডায় ফিরে যাওয়ার পর তিনি দুই দফায় স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার পরিবার অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়।

তিনি লেখেন, জীবনের বাধা অতিক্রম করে আমরা আর সামনে এগুতে পারছিলাম না। ভয়াবহ সময়ের ইতিহাস জড়িত নিদর্শন সংগ্রহ করেছিলাম। মানুষের ভয়াবহ মৃত্যুর স্মৃতি সম্বলিত টাইলস নিয়েছিলাম আমি।

৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস পর্বতের অগ্ন্যুৎপাতে পম্পেই নগরী লাভার নিচে চাপা পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়, মারা যায় হাজার হাজার মানুষ। এই ধ্বংসাত্মক ঘটনার স্মৃতি সম্বলিত নিদর্শনকেই তার দুর্ভাগ্যের কারণ বলে মনে করছেন নিকোল।

পম্পেই নগরী

পম্পেই নগরী

তিনি আরও জানান, তিনি তার এক বন্ধুকে একটি টাইলস দিয়েছিলেন এবং তাকে তার বর্তমান সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন। তবে তার বন্ধু ওই টাইলস ফেরত দিবে কিনা তিনি জানেন না।

আমি আমার পরিবার, সন্তান ও নিজের ওপর আর এই অভিশাপের বোঝা বয়ে বেড়াতে চাইনা। আমার এই কাজের জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

পার্কের একজন কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন দর্শনার্থী মোজাইক টাইলস বা প্লাস্টারের অংশের মতো নিদর্শনগুলো ফিরিয়ে দিয়েছেন।

পম্পেই ভ্রমণের সময় চুরি করা এই নিদর্শনগুলো তারা একইভাবে দুর্ভাগ্যের কথা জানিয়ে ফিরিয়ে দেন। ফেরত পাওয়া কিছু নিদর্শনসহ চিঠিগুলো বর্তমানে প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই নিদর্শনগুলোর তেমন গুরুত্ব না থাকলেও, প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিঠিগুলো অনেক রহস্যের প্রমাণপত্র।

পম্পেই বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখনো এই নগরীর বিভিন্ন অংশে প্রত্নতাত্ত্বিকদের খনন কাজ চলে। গত ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ ৪০ বছর পর ‘হাউজ অব লাভারস’ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়।

পম্পেই নগরীর বহুল পরিচিত এই স্থাপনাটি ১৯৮০ সালের ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাচীন এই শহরটির সুরক্ষায় ২০১৪ সালে গৃহীত গ্রেট পোম্পেই প্রোজেক্টের আওতায় স্থাপনাটি আবারও খুলে দেয়া হয়।

সূত্র: সিএনএন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.