269920

ইঁদুর নিধনে চোঙা ফাঁদ, সুফল পাচ্ছে কৃষক

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বিষটোপ, পলিথিনের নিশানা আর কলাগাছ পুঁতেও কুলকিনারা না পেয়ে বাঁশের চোঙা ফাঁদ দিয়ে ইঁদুর নিধন করছেন কৃষকরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানক্ষেতে কালো ইঁদুরের উপদ্রব দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। ধানক্ষেত কেটে নষ্ট করায় কৃষকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। দুই সপ্তাহ আগে ধানক্ষেতে ইঁদুরের আলামত দেখে বিষটোপ, পলিথিনের নিশানা ঘেরে এবং কলাগাছ পুঁতে ইঁদুর তাড়ানোর চেষ্টা করেন চাষিরা। কিন্তু এসব পদ্ধতি তেমন কাজে আসে না।

এমন অবস্থায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুুদুুল হাসান ভ্রাম্যমাণ ফসল ক্লিনিক চালুর মাধ্যমে স্থানীয় প্রযুক্তি (চোঙা ফাঁদ) ব্যবহার করে কিভাবে ইঁদুর নিধন করা যায় সেই বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। আর এই বাঁশের চোঙা দিয়ে কিভাবে ফাঁদ তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেন। এরপর থেকে কৃষকরা শুরু করে চোঙা ফাঁদ ব্যবহার।

আউলিয়াপুকুর ইউপির কৃষক আব্দুল মোমেন জানান, বাঁশের তৈরি চোঙা ফাঁদ দিয়ে গত ১০ দিনে প্রায় ২০০টি ইঁদুর মেরেছেন তারা। প্রতিদিন ১০-১৫টি করে ইঁদুর মারলেও থামছে না উৎপাত।

তারা জানান, প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানক্ষেতে বিশেষ যন্ত্রটি একাধিক স্থানে বসিয়ে দিয়ে আসেন। পরদিন সকাল হতেই ছোটেন ফাঁদে আটকানো ইঁদুর খুলতে।

বাঁশের চোঙাসহ ইঁদুর হাতে ক্ষেত থেকে উঠে আসা সাইতাড়া ইউপির জগৎনাথপুর এলাকার কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, আমার ৪ বিঘা জমির ধানগাছ কেটে নষ্ট করেছে। কয়েক দিনে ৪০টি ইঁদুর মেরেছি।

একই এলাকার কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, আমার ২২ কাঠা জমিতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। গত ১০ দিনে ১৬টি ইঁদুর মেরেছি।

ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখে আক্ষেপ করে কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা প্রতি ৫০ শতাংশ জমিতে প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ করে ধান লাগিয়েছি। এমনিতে ধানের দাম ভালো পাই না। এর ওপর আবার ইঁদুরের উৎপাত। গত কয়েক দিনে চোঙা ফাঁদ দিয়ে ৯টি ইঁদুর মেরেছি। এতে ইঁদুরের উৎপাত অনেকটা কমে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান ইঁদুরের উপদ্রবের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কিছু এলাকায় ইঁদুর দেখা গেছে। চাষিদের সম্মিলিতভাবে ইঁদুর নিধন করতে হবে। বাঁশের চোঙা ফাঁদ দিয়ে ইঁদুর নিধন প্রক্রিয়া অনেকটা কার্যকর। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেকেই ভালো সুফল পাচ্ছেন। তাছাড়া চোঙা ফাঁদ ব্যবহারে কৃষকদের ভ্রাম্যমাণ কৃষি বান্ধব চিকিৎসা সেবা নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.