269178

কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে মায়ের

নারায়ণগঞ্জের তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে দুই ছেলে সাব্বির ও জুবায়েরকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে মা পারুল বিবির।
পারুল বিবির তিন ছেলের মধ্যে মো. সাব্বির নারায়ণগঞ্জ সরকারি কলেজে বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল, জুবায়ের নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল আর ইয়াছিন হাজীগঞ্জে মাদরাসায় মক্তবে লেখাপড়া করে।

ছেলেদের প্রশংসায় মা পারুল বিবি বলেন, ছেলে দুটো সব সময় আমার দুঃখ দূর করতে চাইত। সান্ত্বনা দিত। বলত ভালো চাকরি করে তোমাকে নিয়ে সোনার সংসার গড়ে তুলবো। এমনটাই স্বপ্ন ছিলো সাব্বির ও জুবায়েরের। এখন কাঁদতে চাইলেও আর কান্না আসে না। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে।

সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে মঙ্গলবার পারুল বিবি জানান, গত শুক্রবার এশার নামাজ পড়ার জন্য তিন ভাই তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে যায়। এক ছেলে ঘরে ফিরলেও দুই ছেলে আর ফিরে আসেনি। ছোট ছেলে ইয়াছিন ফরজ নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হওয়ার দুই মিনিট পরই বিস্ফোরণ ঘটে। সে দৌড়ে বাসায় এসে বিপদের কথা জানায়, ‘ভাইয়াদের বিপদ। তাদের বাঁচাও।’

পারুল বিবি বলেন, ছেলেদের বাবা নুরুউদ্দিন থেকেও নেই। সে আলাদা থাকে। ছেলেদের লেখাপড়া ও নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। যার কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী ও শিশুদের আরবি পড়িয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে সংসার খরচ ও ছেলেদের লেখাপড়া করিয়েছি। এজন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি দুই ভাই টিউশনি করে সংসারে সাহায্য করত।

পারুল বিবি বলেন, আমার সোনার দুই ছেলে বেঁচে নেই এটা ভাবতেও পারছি না। তিন ছেলেকে নিয়ে একটি রুমে কষ্ট করে বসবাস করতাম। ছেলে দুইজন বড় হওয়ায় দুই মাস আগে দুই রুমের একটি ফ্ল্যাট নিয়ে বসবাস শুরু করি। কিন্তু বিস্ফোরণে সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.