269108

বিশ্বের প্রথম হলুদ পদ্মের দেখা বাংলাদেশে

পদ্ম ফুল ভাসছে শরতে জলাশয়ে। যা দেখে মোহিত শিশু থেকে বৃদ্ধ মন! প্রকৃতি মাঝেমধ্যে তার ভালোবাসা এভাবেই বিলিয়ে দেয়। এই ভালোবাসার আরেকটু বাড়িয়ে দিলো হলুদ পদ্ম। যা শুধু মাত্র বাংলাদশেই দেখা মিলেছে। পুরো বিশ্ব তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও এ রঙের পদ্মের খেলা মিলবে না হয়তো।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দক্ষিণ গ্রাম বিলে হলুদ পদ্মের সন্ধান মিলেছে। ঠিক হলুদ নয়, হলুদাভ। অফহোয়াইটও বলা যেতে পারে। যেন অসংখ্য পাঁপড়ির একটি তোড়া সবুজ পাতা ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণ ফোটা হলুদ পদ্মের পাশে গোলাপি পদ্মটি দেখতে কিছুটা রুগ্ন মনে হচ্ছে। যদিও পাঁপড়ির দৈর্ঘ্য গোলাপি পদ্মেরই বড়।

বেলা বাড়লেই শিশুরা পৌঁছে যায় জলাশয়ে। তারপর নৌকায় করে তুলে নেয় পদ্ম। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে ভ্রমণপিপাসুরা সেখানে গিয়ে প্রাণের আনন্দে উপভোগ করছে পদ্ম ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শরৎ আসলে প্রকৃতিগতভাবেই ফুটে ওঠে এই ফুল।

বিশ্বে দুই ধরনের পদ্ম দেখা যায়; এশিয়ান বা আমেরিকান পদ্মে একটি ফুলে পাপড়ি থাকে ১২ থেকে ১৮টি। সেখানে বুড়িচংয়ের এই হলুদ পদ্মে পাপড়ি সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। ভেতরের পাপড়ি পুংকেশরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই ফুলে পুংকেশরের সংখ্যাও প্রায় তিনশ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও বেঙ্গল প্লান্ট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে নতুন জাতের হলুদ পদ্ম নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। গবেষকদের মতে, বিশ্বের মধ্যে এটা পদ্মের নতুন এক জাত। গবেষকদের মতে, উদ্ভিদ বিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন।

স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দিন লিটন বলেন, এই জলাশয়ে অনেক আগ থেকেই পদ্ম ফুল ফোটে। গত দুই বছরের মধ্যে এবার বেশি ফুল ফুটেছে। ওদের কেউ বিরক্ত না করার কারণে বংশবিস্তার ঘটেছে বেশি। যখনই সেখানে যাই, প্রাণ জুড়ে যায়।

নতুন এই জাতের পদ্মের ছবিসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির নামকরণ বিভাগ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় হারবেরিয়ান জাদুঘর ইংল্যান্ডের কিউ গার্ডেনে পাঠিয়েছেন গবেষকরা। আন্তর্জাতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উদ্ভিদবিজ্ঞানে হলুদ পদ্ম হবে অনন্য সংযোজন। এমনকি এর আলাদা নামকরণও হবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.