268400

হঠাৎ পুরো পরিবার গায়েব, বাড়ির সবকিছুই আছে সাজানো গোছানো

আধুনিক প্রযুক্তির যুগে মানুষের দৈনন্দিন জীবন কতই না সহজ হয়েছে। এক দশক আগের জীবনও ছিল বেশ কঠিন। তবে সেসময়কার প্রজন্মের  জীবনযাত্রা কেমন ছিল তা চাক্ষুস দেখা সম্ভব না। খানিকটা গল্প শুনে অনুমান করার মতো। সম্প্রতি কানাডার অন্টারিওতে একজন নগর অভিযাত্রী আবিষ্কার করেছেন একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। যেটি ১৯৫০ সাল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে বলে ধারণা তার।

এই নগর অভিযাত্রী বাড়ির ভেতরের অবস্থার ছবি তুলেছেন। যেখানে বেশ ভালো অবস্থায় দেখা যায় বাড়িটিকে। বাড়ির ভেতরটা দেখে বোঝা যায় সেখানে বেশ সৌখিন মানুষেরাই বসবাস করতেন। বাড়ির ভেতরে একটি ওষুধের বাক্স পাওয়া যায়। যেটা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, জীবাণুনাশক ও ফাইস্ট এইড সাজানো রয়েছে।

বাড়ির কর্তার শেভিং কিটগুলো সেইসময়ের ব্যবহৃত ব্যবহৃত জিনিস সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে। পুরো পরিবারের সবাই বেশ সৌখিন ছিলেন বটে। তখনকার আমলে পুরুষদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেজার, ব্লেড, আফটার শেভিং ক্রিম সাজানো টেবিলের উপর। মনে হয় বাড়ির লোকেরা সুগন্ধি খুব পছন্দ করতেন। একটি ড্রয়ারে পাওয়া যায় তারই নমুনা। যেগুলো ১৯৫০ এর দশকে বেশ দামি সুগন্ধি ছিল।

বাড়ির কর্তার শেভিং কিটগুলো

বাড়ির কর্তার শেভিং কিটগুলো

বাড়ির একটি ঘরে পাওয়া গেল বইয়ের তাক। পুরো ঘর ভর্তি বই আর বই। ধর্মীয়, যুদ্ধ, উপন্যাসের পাশাপাশি ম্যাগাজিনও রয়েছে এখানে। এমনকি শোয়ার ঘরেও রয়েছে বইয়ের তাক। শোয়ার ঘরের বিছানাটি দেখেই বেশ আরামদায়ক মনে হচ্ছে। বাড়ির বাসিন্দা আরামপ্রিয় মানুষ ছিলেন বলা যায়।

বেশ কিছু হাতে লেখা চিঠিও পাওয়া যায় ঘরে। তবে এই অভিযাত্রী চিঠির ভাষা এবং এর বিষয় বস্তু কিছুই বুঝতে পারেননি ওই নগর অভিযাত্রী। বসার ঘরে ছিল লাল গালিচা পাতা। ছিল সোফা, চেয়ার, গ্রামোফোন, সিডি প্লেয়ার। রয়েছে একটি শোপিসের কেবিনেট। এতে রয়েছে কাঁচের এবং চীনামাটির শোপিস, ফুলদানি, চশমা, মগ সাজানো অতি যত্নে।

বাড়ির রান্নাঘরে ছিল প্যাকেজিং খাবার ও ব্যবহার্য অনেক জিনিস। যা খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো অবস্থায় আছে প্রায় এক শতক ধরে। এই বাড়ির বাথরুমে রয়েছে সেই সময়ের বাথটব, ড্রেসিং টেবিল। কিছু কাপড়ও ছোলানো রয়েছে হ্যাঙ্গারে। কিছু ফটো ফ্রেম দিয়ে সাজানো এর দেয়াল। ড্রেসিং টেবিলের উপর রয়েছে টুপি, গয়না, ত্বকের ক্রিম।

বাড়ির ভেতরটা দেখে বোঝা যায় সেখানে বেশ সৌখিন মানুষেরাই বসবাস করতেন। ছবি: সংগৃহীত

বাড়ির ভেতরটা দেখে বোঝা যায় সেখানে বেশ সৌখিন মানুষেরাই বসবাস করতেন। ছবি: সংগৃহীত

এতো সাজানো গোছানো বাড়ি রেখে বাসিন্দারা কোথায় গেলেন। আর কেনই বা তাদের চলে যেতে হলো? কিছুই জানা যায়নি। এমনকি বাড়ির বাসিন্দাদের কারো ছবিও পাওয়া যায় নি এখানে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ডাকাতের আক্রমণের চিহ্নও দেখা যায়নি। তবে কেন এমন পরিত্যক্ত বাড়িটি জানে না কেউ। কেন ছাড়তে হয়েছিল স্বপ্ন আর যত্নে সাজানো বাড়ি। শুধু এতকাল ধরে স্মৃতি আকড়েই কালের সাক্ষী হয়ে পরিত্যক্ত পড়ে আছে বাড়িটি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.