267902

ঝাঁকি জালে উঠল ডলফিন, কবিরাজের দর-কষাকষি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীতে এক যুবকের ঝাঁকি জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির একটি ডলফিন। যা গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুক নামেও পরিচিত। ধরা পড়া ডলফিনটির ওজন প্রায় পাঁচ মণ ও দৈর্ঘ্য আট ফুট। তবে এটি বেশিক্ষণ জীবিত ছিল না। আর মৃত ডলফিনটি কেনার জন্য বিভিন্ন কবিরাজরা দর-কষাকষি করেন।
শনিবার বিকেলে উপজেলার বড়ভিটা ইউপির পূর্ব-ধনিরাম বুড়ির চর গ্রামের সুরত আলীর ছেলে বেলাল হোসেনের জালে ডলফিনটি ধরা পড়ে। ডলফিনটি বেশি দামে বিক্রি করতে রাত জেগে পাহারা দেয়া হয়েছে। এছাড়া এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করে।

বেলাল জানান, বিকেলে ঝাঁকি জাল নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ধরলা নদীতে মাছ ধরতে যান তিনি। নদীর কিনারায় মাছ দেখে জালটি ফেলেন। কিছুক্ষণ পর বড় ধরনের কোনো মাছ ভেবে চিৎকার করেন। এ সময় স্থানীয়রা এসে জালটি তোলেন। পরে এটি ডলফিন বা শুশুক বলে নিশ্চিত হন তিনি। তবে জালের মধ্যে ডলফিনটির দাঁত আটকে যাওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়ে।

তিনি আরো জানান, চারজন মিলে ধরলা নদীর কিনারা থেকে ডলফিনটি বাড়িতে আনেন। এখানে পানিতে রেখে তা বাঁচানোর চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

বেলাল বলেন, ডলফিনটি আটকায় আমার জাল ছিঁড়ে গেছে। এতে পাঁচ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাই এটি বিক্রির আশায় রাত জেগে বাবাসহ পাহারা দিয়েছি। এর তেলের মূল্য অনেক বেশি। এরইমধ্যে কয়েকজন কবিরাজ ডলফিনটি সাত-আট হাজার টাকায় কিনতে চেয়েছেন। কিন্তু বিক্রি করিনি। ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে।

ডলফিনটি এক নজর দেখতে আসা স্থানীয় শুভ, আদিল রাকিবসহ আরো অনেকে বলেন, ডলফিন আমরা জীবনে প্রথমে দেখলাম। নাম শুনলেও বাস্তবে দেখায় ভীষণ ভালো লেগেছে।

গৃহবধূ শিল্পী বেগম ও ফাতেমা বেগম বলেন, আমরা গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুক নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখার ভাগ্য হয়নি। বেলালের জালে আটকা পড়ায় বাড়িতে বসেই ডলফিন দেখেছি।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলার সাবেক মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুন্নবী মিঠু বলেন, মাছের হার যেখানে বেশি থাকে সেখানেই এমন ডলফিনের আগমন ঘটে। ধরলা নদীতে যেহেতু ডলফিনটি ধরা পড়েছে নিঃসন্দেহে এখানে মাছ বেড়েছে। যা এ অঞ্চলের জন্য ভালো একটি খবর।

তিনি বলেন, ডলফিনের চামড়া মূল্যবান। এটি রফতানি হয়। এছাড়া তেলের অনেক গুণাগুণ রয়েছে। এজন্যই ডলফিন অধিক মূল্যে বিক্রি হয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.