গর্ভবতী হাতির নির্মম মৃত্যুতে ভারতে তোলপাড়, তদন্তের নির্দেশ
আনারসের ভেতর বিস্ফোরক দ্রব্য ঢুঁকিয়ে গর্ভবতী একটি হাতিকে হত্যার ঘটনায় ভারতে রীতিমত তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই নির্মম ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছে দেশটির সাধারণ মানুষজন থেকে শুরু করে সবাই। এর মধ্যেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে কেরালা সরকার। এ ঘটনার তদন্ত করতে এরই মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত দলও গঠন করেছে তারা।
গর্ভবতী হাতি হত্যার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে আরো তিনজন সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে।
কেরালার মমল্লপ্পুরমে হাতির মৃত্যুর ঘটনার উপর নজর রাখছে কেন্দ্রও। কেরালার কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। রাজ্যটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন। ঘটনার নিন্দা করে তিনি বলেছেন, ‘বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে প্রাণী হত্যা করা ভারতীয় সংস্কৃতি নয়।’ ঘটনার তদন্ত হবে ও অপরাধীদের রেহাই পেতে দেবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মৃত গর্ভবতী হাতিটি সাইলেন্ট ভ্যালি জাতীয় উদ্যানে থাকত। সেখান থেকে মল্লপ্পুরমের গ্রামে এসেছিল খাবারের খোঁজে। সেখানেই মানুষের দেয়া বাজি ভর্তি আনারস তার মুখে ফাটে। প্রবল যন্ত্রণা সহ্য করে গর্ভের সন্তানকে বাঁচাতে ভেলিয়ার নদীর জলে নেমে দাঁড়িয়েছিল।
গত ২৭ মে মৃত্যু হয় তাঁর। বনবিভাগের র্যাপিড রেসপন্স দলের অফিসার মোহন কৃষ্ণণের ফেসবুক পোস্টের সৌজন্যে গোটা ঘটনা সামনে আসে।
চোয়ালে আঘাত নিয়ে গত এপ্রিলে আরও একটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছেন কেরালার বন্যপ্রাণ ওয়ার্ডেনের প্রধান সুরেন্দ্র কুমার। তিনি জানান, এই মৃত্যুর সঙ্গে সেই হাতির মৃত্যুর বেশ মিল রয়েছে। ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘দু’টি মৃত্যুই একই রকম। দু’জনেরই মুখে ক্ষত। এপ্রিলে সেই হাতির মৃত্যুর কারণ জানতে ফের রাসায়নিক পরীক্ষা করা হবে।’
বন্যপ্রাণী মূলত বন্য শূকরের অত্যাচার থেকে ফসল বাঁচাতে ফলের ভিতর ছোট ছোট পটকা ভরে রাখে সেখানকার কৃষকরা। যাতে ফাটলেই ভয় পেয়ে চলে যায়। সুরেন্দ্র কুমার বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘ফসল বাঁচাতে ফল বা খাবারে সঙ্গে কিছু পটকা বেঁধে রাখে কিছু কৃষক। কিন্তু তা খুবই স্বল্প ক্ষমতার ছোট পটকা। সেই পটকায় এত বড় হাতির মৃত্যু হওয়া সম্ভব নয়।’
সূত্র: এনডিটিভি ও আনন্দবাজার