রোজাদারের জন্য রয়েছে বিশেষ দুই সুসংবাদ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- ‘রোজাদারের জন্য দুটি সুসংবাদ রয়েছে। একটি হলো- ইফতারের সময়। আরেকটি হলো- তার মালিক ও মাওলার দরবারে হাজির হয়ে সরাসরি তার সাক্ষাৎ লাভের সময়। তিনি বলেন, আমি শপথ করে বলছি, রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহতায়ালার কাছে মেশকের সুবাসের চেয়েও বেশি প্রিয়। আর রোজা একটি ঢাল। তোমাদের কেউ রোজা রাখলে তার উচিত হচ্ছে- অশ্লীল অনর্থক কথা পরিহার করে চলা। সে যেন কখনো কারও সঙ্গে ঝগড়া না করে। কেউ যদি গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায় বা গালাগাল করে তা হলে সে শুধু এতটুকু বলে দেবে- ভাই! আমি একজন রোজাদার।’
এই হাদিসে রোজার যে ফজিলত ও বরকতের কথা বলা হয়েছে, তা কেবল এমন রোজাদারের ভাগ্যেই জুটবে, যারা নফসের কামনা-বাসনা, পানাহার ও গোনাহ পরিত্যাগের পাশাপাশি অনর্থক কথাবার্তা ও কার্যকলাপও পরিহার করে চলে। অন্য এক হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি রোজা রেখে অশ্লীল ও গর্হিত কাজ পরিহার করে চলতে পারে না, তার ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাটানোর কোনো প্রয়োজন আল্লাহতায়ালার নেই।
অতএব রমজানের বরকত রহমত পেতে হলে শুধু গোনার কাজ থেকে বিরত থাকাই যথেষ্ট নয়; বিরত থাকতে হবে- অনর্থক কথা ও কাজ থেকেও।
এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা পরম করুণাময় রবের রহমত আর তার দয়ার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। তার ভা-ারে কোনো কিছুর কমতি নেই। রমজান মাসে সেই অশেষ ভাণ্ডার থেকে মুষলধারে বৃষ্টির চেয়েও বহুগুণ সমৃদ্ধ হয়ে তার রহমত বর্ষিত হতে থাকে।
রোজার ফজিলত ও মর্যাদা বোঝাতে গিয়ে হজরত আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- ‘মানুষের যে কোনো ভালো কাজের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আল্লাহতায়ালা আমাকে বলেছেন, রোজা এই সাধারণ নিয়মের আওতাভুক্ত নয়। রোজা হচ্ছে- বান্দার পক্ষ থেকে আমার জন্য এক তোহফা। আর আমিই তার সওয়াব ও প্রতিদান দেব। আমার বান্দা শুধু আমারই সন্তুষ্টির জন্য তার মনের চাওয়া-পাওয়া ও খাবার-দাবার পরিহার করে থাকে।’
অর্থাৎ এই উম্মতের সাধারণ বৈশিষ্ট্যই হলো- তাদের এক নেকির সওয়াব পূর্ববর্তী উম্মতের তুলনায় কমপক্ষে দশগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমলকারীর একাগ্রতা, ইখলাস ও ভালোবাসার অনুপাতে সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয় বহুগুণ। এমনকি কোনো কোনো বান্দার তাকওয়া ও বিনয়ের কারণে তাদের নেক আমলের সওয়াব সাতশগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রমজানের প্রতিদান তারও চেয়ে বেশি। আল্লাহতায়ালা এই প্রতিদান দেবেন নিজের মতো করে, যার কোনো হিসাব নেই।
রোজাসংক্রান্ত মাসআলা
অনিচ্ছাকৃত বমি হলে, যদি মুখ ভরেও হয়, তা হলে রোজা ভাঙবে না। তেমনি বমিমুখে এসে অনিচ্ছায় ভেতরে চলে গেলেও রোজা ভাঙবে না। হাদিসে আছে- অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তির বমি হলে তার রোজা কাজা করতে হবে না। (জামে তিরমিজি)।
সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়