264855

দানে বন্ধ হয় কবরের আজাব

রমজানে দানের প্রতিদান অন্য সময়ের তুলনায় অনেক গুণ বেশি সওয়াব মেলে। তাই এ মাসে অধিক হারে দান করা উচিত। বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের এই ক্রান্তিকালে দানের হাত প্রসারিত করা প্রত্যেক সামর্থ্যবানের জন্য অবশ্যকর্তব্য। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন-পানি যেমন আগুনকে নিভিয়ে দেয়, নিশ্চয়ই তেমনি সদকাও কবরের আজাবকে বন্ধ করে দেয় (তিরমিজি)।

যারা সম্পদশালী নন, তারাও দানে পিছিয়ে থাকবেন না। আপনার যতটা সামর্থ্য আছে, যতটা সম্ভব হয় দান করুন। নিয়তগুণেই আমলের সওয়াব দেবেন আল্লাহ তায়ালা। নবী করিম (স) বলেছেন, তোমরা খেজুরের সামান্য অংশ সদকা করে হলেও নিজেদের জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর (বোখারি ও মুসলিম)। কেউ যদি অভাবীদের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করে, তা যত কম বা সামন্যই হোক না কেন, প্রভুর কাছে তা অতিপ্রিয় বলে বিচেচিত হয়।

মানুষের ভেতরে সম্পদের প্রতি মোহ ও আকর্ষণ খুব প্রবল। ইহকালে ধন-সম্পদের প্রয়োজনীয়তাই এ আকর্ষণ তৈরি করে। অর্থের জন্য বিভোর থাকা মানুষের মনে এমন এক চাহিদা তৈরি হয়, যা আর শেষ হয় না; যতক্ষণ না মৃত্যু তাকে ছিনিয়ে নেয়। এই স্বল্প আয়ুর জীবনে অর্থের পিছে ছুটে সব বরবাদ করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। অর্থ তো মানুষের কল্যাণের জন্য। আপনার সম্পদ যদি মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয়, আপনার অর্থ যদি অসহায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারে, তবেই তা হয়ে ওঠে অর্থবহ। নতুবা অর্থই যে অর্থের মূল- মৃত্যুমুখে তা অনুধাবন করেন সবাই।

দানের ক্ষেত্রে প্রথমেই গুরুত্ব দিন আত্মীয়স্বজনকে। শুরুতে পরিবারে সচ্ছলতা, সমতা ফিরিয়ে আনতেই ইসলাম এই নির্দেশ দিয়েছে। আত্মীয়স্বজনকে সহযোগিতার পর পর্যায়ক্রমে নিজের এলাকার গরিব, এতিমদের দান করুন। এর পর অন্যদের- যারা আপনার দরজায় এসে কড়া নাড়তে লজ্জাবোধ করেন, কিন্তু অসহায়, তাদের নিজে গিয়ে দান করুন। আর যারা আপনার দরজায় এসে কড়া নাড়েন, তাদের কখনো বিমুখ করবেন না।

দুর্ব্যবহার করবেন না। ধমক দেবেন না। তারা মনে কষ্ট পায়- এ ধরনের কোনো আচরণ প্রকাশ করবেন না। তারাও আপনার মতো একই খোদার বান্দা। আপনার মতো একই রক্তে-মাংসের মানুষ। এই জীবনে তিনি হয়তো সম্পদশালী নন, পরজীবনেও যে নিঃস্ব থাকবেন, সে কথা কি বলতে পারেন? একদিন তো তার সঙ্গে আপনার দেখা হয়ে যাবে।

দান করুন গোপনে, পরিশুদ্ধ নিয়তে। কেবলই সেই রবের জন্য, যিনি আপনার রিজিকদাতা; পালনকর্তা। লোক দেখানোর জন্য দান করলে তা কবুল হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন আল্লাহর ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না, তখন আল্লাহ তায়ালা সাত শ্রেণির মানুষকে তার (আরশের) ছায়া দান করবেন। (তাদের মধ্যে একজন হলো) যে ব্যক্তি এত গোপনে সদকা বা দান করে যে, ডান হাত যা দান করে, বাম হাত তা টের পায় না (বোখারি, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ)।

রোজাসংক্রান্ত মাসআলা

দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে তা যদি থুথুর সঙ্গে ভেতরে চলে যায় আর রক্তের পরিমাণ থুথুর সমান বা বেশি হয় তবে রোজা ভেঙে যাবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.