264023

করোনা মোকাবিলায় বায়োকেমিস্ট ও বায়োলজিস্টদের যুক্ত করার দাবি

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটিতে বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্ট, মহামারি বিশারদ, ভ্যাকসিন গবেষক ও অর্থনীতিবিদদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব জানিয়েছে গ্র্যাজুয়েট বায়েকেমিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (জিবিএ)। সরকারি সহযোগিতা পেলে ভিটিএম তৈরি এবং ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্স করে প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট তৈরির কাজে বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্টরা কাজ করবেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

তাদের অভিযোগ সরকারকে করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতার প্রস্তাব দিলেও তার কোন জবাব পাওয়া যায়নি। এই কাজে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে তা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে।

করোনা প্রতিরোধে মলিকুলার বায়োলজিস্টদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার সক্ষমতা থাকার পরও গত ১৮ এপ্রিল গঠিত ১৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় পরামর্শক কমিটিতে বায়োকেমিস্ট ও মলিকুলার বায়োলজিস্ট কাউকে রাখা হয়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিজ্ঞানী প্রফেসর প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, “বর্তমানে করোনা প্রতিরোধ একটি যুদ্ধ। বিশ্বব্যাপী এই যুদ্ধে যারা এখন পর্যন্ত সফলতা দেখিয়েছে তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে।”

তিনি বলেন, “এই যুদ্ধে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও একটি সমন্বিত কার্যক্রম দরকার যাতে চিকিৎসকদের পাশাপাশি গবেষকদের কাজ করার সুযোগ থাকবে।”

আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী (আইসিডিডিআরবি) বলেন, “বর্তমানে যে টেস্ট করা হচ্ছে তার কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কয়েকদিন পরপর টেস্ট কিট পরিবর্তন করা হচ্ছে। ভিটিএম এর পরিবর্তে নরমাল স্যালাইনে স্যাম্পল সংরক্ষণ করা হচ্ছে যা স্যাম্পলের গুণগত মান কমিয়ে দিচ্ছে।”

জিবিএ জানিয়েছে, ভাইরাসটি দ্রুত এর জিনোমে পরিবর্তন বা মিউটেশন ঘটায়, এর জন্য ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। পর্যাপ্ত সংখ্যক টেস্ট করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সনাক্ত ও আইসোলেশনের মাধ্যমে কয়েকটি দেশ করোনা প্রতিরোধে সফলতা পেয়েছে।

কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি উল্লেখ করে তারা বলেন, এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো টেস্ট বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভুল। বিশ্বব্যাপী আরটি-পিসিআর হলো করোনা সনাক্তকরণে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড মেথড। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়না।

এই মলিকুলার প্রযুক্তিটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরএনএ/ডিএনএ নিয়ে গবেষণার কাজে প্রতিনিয়তই ব্যবহার হয় এবং সাধারণত বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, মাইক্রোবায়োলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ও শিক্ষকরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন।

তাদের মতে, এজন্য এসব বিভাগের ছাত্র ও শিক্ষকগণের এ প্রযুক্তি সম্পর্কে তত্ত্বীয় এবং প্রায়োগিক উভয় প্রকার জ্ঞান আছে। বিশ্বব্যাপী করোনা শনাক্তকরণে এই সকল বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগানো হলেও বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। এদেশের বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রযুক্তি এবং বিশেষজ্ঞ থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের কাজে লাগানো হয়নি।

সূত্র : ঢাকা টাইমস

পাঠকের মতামত

Comments are closed.