234898

বুয়েট ছাত্র মেহেদী বখত ফেসবুকের প্রথম বাংলাদেশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার

ডেস্ক রিপোর্ট : মেহেদী বখত একজন বাংলাদেশি আমেরিকান সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ২০১২ সালে প্রথম বাংলাদেশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ফেসবুকে যোগদান করেন।

তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা “জায়েদ বখত” একজন অর্থনীতিবিদ এবং মা ‘হালিমা জায়েদ’ গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী। মীর্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১১তম এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হন তিনি। এরপর বুয়েটে কম্পিউটার কৌশল বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেন। মেহেদী বখত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়ার সময় দুইবার এসিএম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার (আইসিপিসি) চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়েছিলেন।

পরে বুয়েট থেকে স্নাতক হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আরবানা-ক্যাম্পিংয়ে (ইউআইইউসি) পড়তে যান। এখান থেকেই নেটওয়ার্কিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি চাকরির জন্য গুগল, অ্যামাজন, লিংকড-ইন এর মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা করেন। এর মধ্যে একটি মজার ব্যাপার ঘটে, সেটি হলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তাঁরা জানতে চায় যে তিনি ফেসবুকে কাজ করতে আগ্রহী কি না? তিনি রীতিমত অবাক হয়ে যান।

একাধিক পর্বে ফোন-সাক্ষাৎকার দিয়ে শেষে “অনসাইট ইন্টারভিউ” দেন তিনি। দুই সপ্তাহের মধ্যে মেহেদীর ডাক এল ফেসবুক থেকে। সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিলেন ফেসবুকের ‘মেসেজেস’ দলে। ‘চ্যাট প্রোডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামেও পরিচিত এ বিভাগ। ফেসবুকের মানবসম্পদ বিভাগের শীর্ষ ব্যক্তিরা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্ব থেকে সন্ধান পান মেহেদীর। উল্লেখ্য যে, ২০০৩ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ওয়ার্ল্ড ফাইনালে যান তিনি। মেহেদী বলেন, ‘ফেসবুকের পরে আমার যেসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ ছিল, সেগুলোর প্রায় সবগুলো থেকেই ভালো পদে চাকরি করার সুযোগ পেয়েছিলাম।’

মেহেদী আরও বলেন , ফেসবুক, গুগল, টুইটার, আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠানে কে কোন প্রোগ্রামিং ভাষায় দক্ষ, সেটি বড় কথা নয়। বরং প্রাথমিক সমস্যাগুলো সমাধানের যোগ্যতা কার কেমন রয়েছে তাঁর ওপর নির্ভর করে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়। ‘এসব ক্ষেত্রে নতুন যাঁরা আসতে আগ্রহী, তাঁদের গণিত অলিম্পিয়াডের মতো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দরকার, যতটা সম্ভব প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।

১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১২ থেকে ০৮ মে ২০১৫ পর্যন্ত প্রায় তিন বছর তিনি ‘ফেসবুকে’ মেসেজেস টিমে ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে “ভ্যারিফ্লো” নামক একটি প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন। ভবিষ্যতে প্রযুক্তি খাতে ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করতে চান মেহেদী বখত।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.