জমি চাষে গরুর বদলে ঘোড়া
অনলাইন সংস্করণঃ- বাজারে বেড়েছে গরুর দাম। অপর দিকে কমেছে ঘোড়ার দাম। তাই পঞ্চগড়ের গ্রামাঞ্চলে চাষাবাদে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়েই জমি চাষ করছেন কেও কেও। এমন দৃশ্যই দেখা গেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া এলাকায়।
বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের বেতবাড়ি এলাকার কৃষক রুবেল হোসেন। প্রতি বছর অল্প পরিসরে আখ চাষ করেন। এবারও ৫০ আখ চাষ করেছেন। আখ চাষাবাদে কয়েবার লাঙল আখের গোড়ার মাটি নরম করে দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে সবাই গরুর হাল ব্যবহার করে। বর্তমান বাজারে গরুর দাম অনেক বেশি। এক জোড়া হালের গরু কিনতে গেলে খরচ পড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে তিন জোড়া ঘোড়া কেনা যায়। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকাতেই ১টি ঘোড়া কেনা যায়। রুবেলের আগে হালের গরু থাকলেও এখন নেই। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় কেনারও সামর্থ নেই তাই। নিজের চাষাবাদের প্রয়োজনে তাই বাজার থেকে গরুর বদলে ২০ হাজার টাকায় দুটি ঘোড়া কিনেছেন রুবেল। শুরুতে ঘোড়াগুলোকে হালের কসরৎ শেখাচ্ছে বেশ কষ্ট হয়েছে তার। ঘোড়ায় লাঙল জোয়াল জুড়ে দিয়ে অনেক বার চেষ্টার পর আয়ত্তে আসে। এখন পুরোদমে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করছেন তিনি। শুধু নিজের জমিতে চাষাবাদ করছেন না। অন্যের জমিও টাকার বিনিময়ে চাষ করে দিচ্ছেন। ১ বিঘা জমি এক চাষ দিতে তিনি নিচ্ছেন ৩’শ টাকা।
রুবেলের ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য মোবাইল ফোন দিয়ে ক্যামেরা বন্দি করেন পঞ্চগড় সুগার মিলের আখ উন্নয়ন সহকারী আব্দুল জব্বার মোল্লা। ছবিগুলো তার সহকর্মী হরিশ চন্দ্র রায় তার টাইম লাইনে শেয়ার করলে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে।
রুবেল হোসেন জানান, গরুর দাম বেশি তাই ঘোড়া দিয়েই হাল চাষ করি। ঘোড়ার শক্তি বেশি হওয়ায় দ্রুত ও সুন্দরভাবে হাল চাষ করা যায়। আমি এখন নিজের জমি চাষ করার পাশাপাশি অন্যের জমিও টাকার বিনিময়ে চাষ করে দেই।
মাড়েয়া এলাকার কৃষক নুর মোহাম্মদ জানান, গরুর হালতো এখন দেখাই যায়। অনেক সময় জমি চাষ করতে প্রয়োজন হলেও পাওয়া যায় না। এখন গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করা শুরু হয়েছে। ঘোড়ার যেমন দাম কম তেমনি হাল চাষে গরুর চেয়ে শক্তিশালী।
পঞ্চগড় সুগার মিলের স্থানীয় ইক্ষু সেন্টারের ইনচার্জ হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, আমার সহকর্মী আব্দুল জব্বার মোল্লাহ মাড়েয়া এলাকায় আমাকে ঘোড়া দিয়ে চাষের দৃশ্য দেখাতে নিয়ে যায়। এটি দেশি পদ্ধতিতে লাঙল দিয়ে চাষাবাদে নতুন সংযোজন। আখ রোপন করার পর আখের চারা গাছ একটু বড় হলে তার পাশের মাটি নরম করে দিতে হয়। সেখানে যান্ত্রিক লাঙল ব্যবহার করা যায় না। একমাত্র লাঙল দিয়ে চাষ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে গরুর চেয়ে ঘোড়া দিয়ে লাঙল টানা সহজ হয়।
সূত্র কালেরকণ্ঠঃ