ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের স্বস্তি এনে দেবে মেঘনা ও গোমতী সেতু
ডেস্ক রিপোর্ট: মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু চালুর পর থেকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা অংশের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জুড়ে যানজটের সেই চেনা রূপটি এখন আর দেখা যাচ্ছে না। এই মহাসড়ক দিয়ে যেসব যাত্রী কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী ও চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন, তাদের চোখে-মুখে স্বস্তির হাসি ফুটেছে। নির্বিঘ্নে আরামে ও সময়মতো পৌঁছাতে পারছেন বলেই তাদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং তারা ভীষণ খুশি।
আসন্ন ঈদ-উল ফিতরের দিনগুলোতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা লাখো মানুষকেও যাতায়াতে কোনো ধরনের যানজট, ভোগান্তি আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না বলেও নিশ্চয়তা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতুর উদ্বোধন করেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতু দুটি উদ্বোধনের পর মহাসড়কের দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে গেছে।
এক সময় এই মহাসড়কের গজারিয়া অংশে সপ্তাহে ৪/৫ দিন যানজট লেগেই থাকতো। সেখানে চারলেনের সেতুগুলো খুলে দেওয়ায় আসা-যাওয়া উভয় লেনে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারছে। ফলে মহাসড়কের এই অংশে তীব্র যানজটের কারণে আর কোনো যাত্রীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রমতে, জাতীয় এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আর বিপুল সংখ্যক যানবাহন মেঘনা-গোমতী ও মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজা অতিক্রম করায় যানজটের মুখোমুখি হতে হচ্ছিলো যাত্রীদের। প্রতিদিনের যানজটে মহাসড়কটি মহাভোগান্তিতে রূপ নিয়েছিলো বিগত বছরগুলোতে। আর ঈদযাত্রাসহ বন্ধের দিনগুলোতে এ মহাসড়ক পরিণত হচ্ছিলো আতঙ্কের অন্য নামে।
গজারিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু দুটি উদ্বোধন হওয়ার পর মহাসড়কের গজারিয়া অংশে যানজট শূন্যের কোঠায়। আশা রাখি, আর কোনো সমস্যা হবে না।’
‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের অনেক ভালো প্রস্তুতি নেওয়া আছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বুধবার (২৯ মে) আমাদের ব্যাটালিয়ন থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনাচ্ছি। আশা রাখছি, এবার ঈদে খুব একটা সমস্যা হবে না।’
গাড়িচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘চারলেনের এই সেতু চালু হওয়ায় আমরা ও যাত্রীরা যানজটের অসহ্য ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি।’
কুমিল্লাগামী যাত্রী মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘এ সড়কে যানজটের ভয়েই ঢাকায় থেকে অফিস করতে হয়। আশা করছি, এখন প্রতিদিন বাড়ি থেকে অফিস করতে পারবো।’
নোয়াখালীগামী গাড়ির চালক শামীম শিকদার জানান, ‘এই মহাসড়কে প্রতিদিন যারা যাতায়াত করেন, তারাই বোঝেন যানজট কতো কষ্টকর। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে চরম ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে। আর বন্ধের দিনগুলোতে আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে যানজট।’
নিয়মিত যাত্রী ওয়াজ করণী বলেন, ‘আগে ফেনী থেকে ৪/৫ ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া যেতো। গত ৫/৬ বছর ধরে যানজটের কারণে ৮/১০ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছিলো। এখন সেখানে মাত্র সময় লাগছে ৩/৪ ঘণ্টা। সত্যিই অবাক লাগছে, অনেক ভালো লাগছে।’