221877

মুখচেপে ধরে সেলফি তোলার পর ছাত্রীর আত্মহত্যা

ডেস্ক রিপোর্ট : ‘গত ২০ এপ্রিল মেয়ে বাড়ি থেকে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে জোর করে মুখচেপে ধরে সেলফি তুলে ফেসবুক প্রোফাইলে আপলোড করে এক বখাটে।’

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় বখাটেদের যন্ত্রণা সইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে ঘরের সিলিংয়ের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

সরিষাবাড়ী উপজেলার সাঞ্চেরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

মেয়েটির শোকার্ত বাবার অভিযোগ, ‘‘সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ি এলাকার মতি তালুকদারের ছেলে তানিন তালুকদার আমার মেয়েকে বিগত দুই বছর ধরে উত্যক্ত করে আসছে। তাকে নিষেধ করা হলেও সে ভ্রুক্ষেপ করেনি। তার অভিভাবকদের অনেকবার বলা সত্বেও তারা তাদের ছেলেকে শাসন করেনি।’’

তিনি জানান, ‘‘গত ২০ এপ্রিল আমার মেয়ে বাড়ি থেকে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে জোর করে মুখ চেপে ধরে সেলফি তুলে ফেসবুক প্রোফাইলে আপলোড করে তানিন। ছবিটি বন্ধুদের মাঝেও ছড়ায় সে। মেয়ে বিষয়টি আমাকে জানালে আমরা ওই বখাটের বাবা-মাকে অবহিত করি। কিন্তু তারা কোনও গুরুত্ব দেয়নি।’’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘‘ফেসবুকে ছবি দেওয়ার পর থেকেই মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আমি এর বিচার চাই।’’

ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যরা জানান, বখাটের অত্যাচারে আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া ওই শিক্ষার্থী সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সে সোমবার সন্ধ্যার দিকে সরিষাবাড়ী আরামনগর বাজারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে

পড়া শেষে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাড়িতে ফিরে আসে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে মেয়ের থাকার ঘরে গেলে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ঘরের সিলিংয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পান।

পরে স্বজনরা তাকে দ্রুত সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহেদুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল আলম তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজেদুর রহমান বলেন, ময়না তদন্তের জন্য মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ পেলে মামলা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।ঢাকা ট্রিবিউন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.