221644

ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব শিক্ষকের, রাজি না হলে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হুমকি

অনলাইন সংস্করণঃ- শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে মতিউর রহমান ফকির নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুগ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে রাজি না হলে ওই ছাত্রীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন ওই শিক্ষক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই শিক্ষকের ভয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ওই ছাত্রী।

জানা যায়, অভিযুক্ত মতিউর রহমান ফকির উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ৬৬ নম্বর বিনটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরপট্রি গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাস থেকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে গেলে আবার তাকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে বিদ্যালয়ের দোতলায় নিয়ে যান মতিউর রহমান ফকির। সেখানে তিনি বলেন, ‘যদি রাজি না হছ, তাহলে দোতলার ছাদ থেকে ফেলে দেবো। জানি তোর মৃগী রোগ আছে। মরে গেলে আমার দোষ হবে না।’

ওই ছাত্রীর মা বলেন, ‘মতি স্যারের এমন আচরণে ভয়ে গত মঙ্গলবার থেকে মেয়েকে স্কুলে যেতে দেই না। তারা প্রভাবশালী, ভয়ে কারও কাছে বলতে পারছি না। আমরা গরিব মানুষ, তাই আল্লাহর কাছে বিচার চাই।’

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি গোসাইরহাট উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আমার ব্যাপারে সবাই জানে। মেয়েটি আমার ছাত্রী, সে আমার মেয়ের মতো। ওর সঙ্গে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছে সন্তানের মতো। সেই শিক্ষার্থীদের ওপর যে শিক্ষকরা এমন আচরণ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে করে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিউটি মন্ডল বলেন, ‘আমি চোখে দেখিনি। মেয়েটির অভিভাবকরা অভিযোগও করেনি। ব্যাপারটি দেখছি।’

গোসাইরহাট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলমগীর হুসাইন বলেন, ‘বিষয়টি খুবই ভয়ঙ্কর। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ঘটনা প্রসঙ্গে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। মেয়ের বক্তব্য পেলে ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা হবে।

 

সূত্র দৈনিক আমাদের সময়ঃ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.