221602

ওয়াসার এমডিকে ‘সুপেয় পানি’র শরবত খাওয়াবেন রাজধানীবাসী

অনলাইন সংস্করণঃ- ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার ‘সুপেয় পানি‘ দিয়ে শরবত খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে গিয়ে তারা এমডিকে এই শরবত বানিয়ে খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা করবেন।

ওয়াসার পানি শতভাগ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ-ওয়াসার এমডির করা এ মন্তব্যের পর এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বেশ কয়েকজন তরুণ। এই উদ্যোগের অন্যতম একজন হলেন রাজধানীর জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান।

আজ সোমবার দুপুরে এ তথ্য জানান মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রায় সাত বছর আগে আমরা এলাকার পানির অবস্থা সম্পর্কে লিখিতভাবে এই এমডি তাসকিন আহমেদকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সাত বছরেও কোনো উন্নতি হয়নি। তার ওপরে উনার এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।’

মো. মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘কমপক্ষে ১০ সদস্যের একটি দল আমরা ওয়াসার পানি, লেবু, চিনি সঙ্গে নিয়ে ওয়াসা ভবনে যাবো। আমাদের সঙ্গে পুরান ঢাকার একজন ব্যারিস্টারও যোগ দেবেন।’

এর আগে টিআইবি থেকে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। গত শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। টিআইবি যে পদ্ধতিতে এ গবেষণা করেছে সেটি একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক। এটি পেশাদারি গবেষণা হয়নি। ৩৩২ কোটি টাকার অপচয়ের বিষয়ে টিআইবির গবেষণা অনুমান নির্ভর ও বাস্তবতা বিবর্জিত। ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি উৎস থেকে গ্রাহকের জলাধার পর্যন্ত পানি সম্পূর্ণ শতভাগ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ।’

তাকসিম এ খান বলেন, ‘সবাই এ পানি ফুটিয়ে খায় তাহলে জারের পানি ও বোতলজাত পানি কোথায় যায়? টিআইবির গবেষণায় অপচয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরে ৪০০ কোটি টাকা এবং সিস্টেম লস কমানোর মাধ্যমে আরও ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করছে ওয়াসা। বিষয়টি টিআইবির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়নি।’

এর আগে গত বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত মাইডাস সেন্টারে ‘ঢাকা ওয়াসা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।’

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, গবেষণাটির জন্য টিআইবি মাঠপর্যায়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ওয়াসার ১০টি মডস জোনের মোট ২ হাজার ৭৬৮ জন গ্রাহকের মতামত নেয়। জরিপের ফলাফলে বলা হয়, এই গ্রাহকদের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশই ওয়াসার সেবায় অসন্তুষ্ট। এর মধ্যে ২০ দশমিক ১ শতাংশ সন্তুষ্ট। আর ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাহক ওয়াসার সেবায় মোটামুটি সন্তুষ্ট।

 

সূত্র দৈনিক আমাদের সময়ঃ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.