219055

ছিলেন বাগানের ফুটবলার, হলেন বিশ্বসেরা তারকা

রাফায়েল ভারানে। নিশ্চিতভাবেই বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। অর্জনের খাতাও প্রায় পরিপূর্ণ। ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিতেছেন ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ৪টি ক্লাব বিশ্বকাপসহ ১৬টি শিরোপা। দেশ ফ্রান্সের হয়ে জিতেছেন বিশ্বকাপ। ফ্রান্সকে ২০১৮ বিশ্বকাপ জেতাতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দেশ ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও।

সবই তো ঠিক আছে। তা হুট করে ভারানের এই জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে পড়া কেন? কারণ, সম্প্রতি তাকে নিয়ে একটা বই লিখেছেন দুই ফরাসি লেখক লুকা কাইওলি ও কাইরিল কলোত। বইটিতে রিয়ালের ২৫ বছর বয়সী ফরাসি ডিফেন্ডারের জীবনের নানা বাঁকই চিত্রিত হয়েছে।

বইটি জানিয়ে দিচ্ছে, ফুটবল ইতিহাসের অনেক কিংবদন্তির মতো ভারানের ফুটবলের হাতেখড়িও বাড়ির লনে, নিজেদের ফুলের বাগানে। হ্যাঁ, ফ্রান্সের লিল শহরে জন্ম নেওয়া ভারানের ফুটবলের শুরুটা নিজেদের বাগানেই। এরপর ২০০০ সালে মাত্র ৭ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যোগ দেন ফ্রান্সের লিলের স্থানীয় ক্লাব হেলেমেসে। সেখান লেন্স হয়ে ২০১১ সালে পাড়ি জমান বিশ্বসেরা রিয়ালে।

ভারানেদের পূর্বপুরুষদের কেউ ফুটবলার ছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই ভারানেদের পরিবারে ফুটবলের সংস্কৃতিটা ছিল না। এমন একটা পরিবারের একটা ছেলের পক্ষে ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়াটা ছিল কঠিন। নিজের প্রতিভা, দক্ষতা, একাগ্রতা দিয়ে ভারানে সেই বাঁধা জয় করেছেন, সেটি তো এখন দিবালোকের মতোই স্পষ্ট।

পুরোদস্তুর পেশাদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যখন বিশ্বসেরা রিয়ালে যোগ দেন, তখন তার বয়স মাত্র ১৭। তবে বৃদ্ধি বিবেচনা, জীবনের লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল। সেটি তার কথাতেই স্পষ্ট।

রিয়ালে যোগ দিতে যাওয়ার মুহূর্তের বর্ণনা করে বলেছেন, ‘রিয়ালে যাওয়ার সময় আমি নিজেকে বলি, আমি সন্ধ্যা ৮টায় কোনো সিনেমা বা নাইট শো দেখতে যাচ্ছি না। আমি যখন বিমানবন্দরে পৌঁছলাম, দেখলাম অনেক অনেক সাংবাদিক। আমি আগে থেকেই জানতাম ক্লাব হিসেবে রিয়ালের অবস্থান কোথায়। বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের ওই ভিড় দেখে আরও ভালো করে বুঝতে পারি, রিয়াল মাদ্রিদ মানেই বিশেষ কিছু।’

বিশেষ সেই ক্লাবটিতে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে খেলছেন। প্রতিভা-দক্ষতায় হয়ে উঠেছেন রিয়ালের রক্ষণভাগের অন্যতম প্রধান সেনানী। অন্য ক্লাবের ডাক পেয়ে এবার রিয়াল ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বটে; তবে তাকে ধরে রাখতে রিয়ালও মরিয়া। কোচ জিনেদিন জিদান তো প্রকাশ্যেই বলে দিয়েছেন, ভারানেকে যেতে দেওয়া হবে না। আর ক্লাব রিয়াল তো ধরে রাখার আশায় তার বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়াই শুরু করে দিয়েছে।

যাই হোক, নন-ফুটবল পরিবারের সদস্য হিসেবে ভারানে এ পর্যন্ত যা অর্জন করেছেন, তাতে তিনি খুবই খুশি। তবে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের কথাটাই তিনি বললেন আলাদা করে, ‘নিশ্চিতভাবেই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত বিশ্বকাপ জেতা। এটা ছিল স্বপ্ন সত্যি হওয়া।’

শুধু দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা নয়। ভারানের ক্যারিয়ারে গর্ব করে বলার মতো অর্জন আরও অনেক আছে। আছে একটা আক্ষেপও। সেটি কি? শুনুন ভারানের মুখেই, ‘নিজেদের মাটিতে ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হতাশার মুহূর্ত।’ তবে এই আক্ষেপও একদিন মুছে ফেলার স্বপ্নের মালাই বুনে চলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। পরিবর্তন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.