207441

শৈশবেই আব্দুল কাদের জিলানী যে সব আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন

ইসলাম ডেস্ক : সত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র গাউসুল আজম আবদুল কাদের জিলানী (র.) শিশুকাল থেকেই ছিলেন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী। জিলান নগরীর একটি মক্তবে শিক্ষা করার জন্য ভর্তি হন। ইসলামী জ্ঞানবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে একথাও জানা যায় যে, তাঁকে প্রথমে শিক্ষার উদ্দেশ্যে মক্তবে পাঠানো হলে যাত্রাপথে একদল ফেরেশতা এসে তাঁকে বেষ্টন করে রইলেন এবং তাঁকে বেষ্টন করে শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে গেলেন। এ কথাও অনেকে বলে থাকেন যে, গাউসুল আজম আবদুল কাদের জিলানী (র.)কে যখন মক্তবে নিয়ে যাওয়া হয় তখন মক্তবে ছাত্রদের সংখ্যা অনেক ছিল।

বসার কোনো স্থান না থাকায় তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন হঠাৎ তাঁর সঙ্গী ফেরেশতারা গায়েব হতে আওয়াজ দিলেন, তোমরা বিশ্বনিয়ন্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রিয় বান্দার বসার জন্য জায়গা করে দাও। সত্যি এহেন অদৃশ্য বাণী শুনে শিক্ষক-ছাত্ররা চমকে উঠেছিলেন। পরবর্তীতে ছাত্ররা গাউসুল আজম আবদুল কাদের জিলানী (র.)কে জায়গা করে দিলেন। একেবারে প্রাথমিক স্তরে পড়া অবস্থায়ই আলিফ-লাম-মীম হতে আরম্ভ করে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনের পনেরো পারার শেষ পর্যন্ত মুখস্থ পড়ে ফেলতে পারতেন। তাঁর এই প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে ওস্তাদজি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কীভাবে কার কাছ থেকে এত সুন্দরভাবে কোরআন পড়া শিখেছ এবং কীভাবে ১৫ পারা কোরআন শরিফ মুখস্থ করলে? এ কথার জবাবে গাউসুল আজম আবদুল কাদের জিলানী (র.) বলেছিলেন, আমি প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করে থাকি, গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটের মধ্যে থেকে আমি মায়ের তেলাওয়াত শুনে শুনে আমারও মুখস্থ হয়ে গেছে। অর্থাৎ তিনি ১৫ পারা হাফেজ হয়েই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হন।

যেভাবে শয়তানকে বোকা বানিয়েছিলেন : গাউসুল আজম বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (র.) শয়তানকে বোকা বানিয়েছিলেন! কথিত আছে যে, একবার এক মরুপ্রান্তরে তিনি ভ্রমণ করছিলেন। ইবাদত-বন্দেগি ও ধ্যানসাধনার এক বিশেষ ক্ষণে অদৃশ্য কোনো স্থান থেকে আওয়াজ আসে, ‘হে আবদুল কাদের আমি তোমার প্রতি সন্তুষ্ট। সাধনার মাধ্যমে তুমি আজ এমন একপর্যায়ে উপনীত হয়েছ যে, আমি আল্লাহ তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেছি। অতএব, এখন থেকে শরিয়তের কোনো বিধান তোমার ওপর বাধ্যতামূলক নেই। তুমি ইবাদত কর বা না কর, এতে কিছু আসে যায় না। যে কোনো ধরনের কাজে তুমি এখন থেকে স্বাধীন।’

এ ধরনের কথা শুনে হজরত জিলানী (র.) খুব দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। অদৃশ্য আওয়াজটি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলতে থাকেন, ‘হে অভিশপ্ত শয়তান, তোর কুমন্ত্রণা থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি। তোর এ প্রস্তাব শুনেই আমি বুঝতে পেরেছি যে, এ তোর ভয়াবহ কৌশল। আমাকে পথচ্যুত করার এক মারাত্মক কূটচাল। কেননা, সাধনার কোনো পর্যায়েই ইবাদত-বন্দেগির দায়িত্ব কারও ওপর থেকে তুলে নেওয়া হয় না। শরিয়ত অমান্য করার নির্দেশ আল্লাহ কখনো কোনো ব্যক্তিকে দেন না।

তোর আওয়াজ শোনামাত্রই আমি বুঝতে পেরেছি যে, এমন বাণী আল্লাহর পক্ষ থেকে আসতে পারে না। এ নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল।’ এ কথা শুনে শয়তান বলল, ‘এ ধরনের কথা বলে এর আগে আমি এই প্রান্তরেই অন্তত ২৭ জন সাধকের সর্বনাশ করেছি। আজ আপনি নিজ প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও উচ্চপর্যায়ের সাধনাবলেই রক্ষা পেয়ে গেলেন, হে যুগশ্রেষ্ঠ ওলি।’ তখন তিনি বললেন, আল্লাহর খাস রহমত ছাড়া ধূর্ত প্রতারক শয়তান থেকে বেঁচে থাকার কোনো শক্তি ও ক্ষমতা আমার নেই।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.