এখন কোথায় আছেন পাইলট অভিনন্দন?
অনলাইন সংস্করণঃ- পাকিস্তানে দীর্ঘ ৫৮ ঘণ্টা কাটানোর পর শুক্রবার রাতে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরেছেন ভারতীয় বিমানসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। নিজ দেশের মাটিতে পা রাখার পর একটি রুটিন মেডিকেল চেকআপের মধ্যে দিতে যেতে হয়েছে তাকে। তবে এখন কোথায় আছেন অভিনন্দন?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুটিন মেডিকেল চেকআপের পর অভিনন্দনকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতীয় বিমানসেনার হোস্টেলে। গতকাল শনিবার সকালে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন অভিনন্দন। এদিনই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দেখা করতে যান তার সঙ্গে।
ভারতীয় উড়োজাহাজের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে পাকিস্তানে কোনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। তবে পাকিস্তানে তাকে অনেক ‘মানসিক যন্ত্রণা’ সহ্য করতে হয়েছে বলে ভারতের সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএনআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান বলছেন, ৫৮ ঘণ্টা পাকিস্তানের হেফাজতে ছিলেন তিনি। এই পুরোটা সময়জুড়েই তাকে ‘মানসিক যন্ত্রণা’ সহ্য করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রাক্তন এয়ার মার্শাল ভি কে ভাটিয়া সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ইনজেকশনের সময় সাধারণভাবে পাইলটের পিঠে আঘাত লাগে। তবে ভিডিওতে যেরকম দেখা যাচ্ছে, তাতে তাকে ফিট বলেই মনে হয়। তাই “ডিব্রিফিং”শেষ হওয়ার পরই বিমানসেনায় ফিরতে পারেন অভিনন্দন।’
কী ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষা হবে অভিনন্দনের? এয়ার মার্শাল ভাটিয়া জানিয়েছেন, সাধারণভাবে দেখা হয় ওই ধরনের ঘটনায় কতটা মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন। জানতে চাওয়া হয় শত্রুপক্ষ তার কাছ থেকে কোনো গোপন তথ্য বের করে নিয়েছে কিনা।
এ ছাড়াও তার ওপরে কোনো শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে কিনা। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয় কী ধরনের কথাবার্তা হয়েছে পাক সেনা অফিসারদের সঙ্গে। সাধারণত একে বলা হয় ডিব্রিফিং।
পাঞ্জাবের ওয়াঘা সীমান্তে অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দেওয়া উপলক্ষে শুক্রবার ব্যাপক জনসমাগম হয়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ছিল সংবাদকর্মীদের প্রচণ্ড ভিড়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দুই দফায় সময় পরিবর্তন করে পাইলটকে হস্তান্তর করা হয়। শুরুতে পাঁচটার দিকে তাকে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই এই বিলম্ব হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪৬ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এর পর থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।
এ ঘটনার ১২ দিন পর গত মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। এর পরদিন দুই দেশের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে গোলা ও গুলিবিনিময় হয়। আকাশযুদ্ধে ভারত হারায় দুটি যুদ্ধবিমান। তখনই পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দী হন ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন।
সূত্র আমাদের সময়ঃ