206855

মসজিদকে দুই ভাগ করে নিচ্ছে তাবলিগের দুই গ্রুপ

ডেস্ক রিপোর্ট : তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিভেদ ক্রমশ: বাড়ছে। মারমুখী দুই পক্ষ প্রথমবারের মতো বিশ্ব ইজতেমা করেছে আলাদাভাবে। প্রথমে দেওবন্দপন্থিরা। পরে সা’দ কান্দলভী পন্থিরা। এখন তারা হিসাব কষছেন কাদের ইজতেমায় বেশি মুসল্লির সমাগম ঘটেছে। আলাদাভাবে ইজতেমা শেষ করার পর এখন তাবলিগের জন্য মসজিদ ভাগ করে নিচ্ছে তারা। এক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন মাওলানা জোবায়ের বা দেওবন্দপন্থি কওমীরা।

সা’দ পন্থিরা রীতিমতো কোণঠাঁসা হয়ে পড়েছেন। যেহেতু সারাদেশে কওমী মাদ্রাসার আলেমরা মসজিদগুলোতে ইমাম-মোয়াজ্জিন হিসাবে প্রভাবশালী সেখানে সা’দ পন্থিরা চিল্লায় গিয়ে মসজিদে ঠাঁই পাচ্ছেন না। ফলে বিভিন্ন স্থানে তারা মারধরের শিকার হচ্ছেন অথবা মসজিদের বাইরে খোলা স্থানে ডেরা গেঁড়ে দাওয়াতির কাজ করছেন।

সাদপন্থি তাবলিগের একজন মুরব্বি বলেন, ইজতেমা শেষে আমাদের যে সব জামাত দাওয়াতি কাজে বের হয়েছেন তাদের অধিকাংশকে বিভিন্ন মসজিদ থেকে বের করে দিচ্ছে মাওলানা জোবায়ের গ্রুপের (দেওবন্দপন্থি) লোকজন।

চিল্লায় গেছেন এমন মুসল্লিদের মারধর করা হচ্ছে। দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ, গাজীপুরের শ্রীপুর, সাভার, কেরানীগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদসহ অনেক মসজিদে লাঞ্ছিত করা হয়েছে দাওয়াতি তাবলিগের ভাইদেরকে। ফলে আমরা আমাদের পক্ষের মসজিদগুলোর তালিকা করছি। সেখানেই কেবল সা’দ অনুসারী জামাত পাঠানো হবে।

অপরদিকে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থিরা ঢাকার কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে ভাগ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করছেন, বিরাজমান সংঘাতময় অবস্থা নিরসনের অন্যতম উপায় হতে পারে এটা। কারণ ইতোমধ্যে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় একজন আলেম নিহত হয়েছেন। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সা’দ অনুসারীদের প্রধান মুরব্বী প্রকৌশলী ওয়াসিফুল ইসলাম কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর মাঠ ভাগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন।

এদিকে চলতি বছরের মতো আগামী বছরও পৃথকভাবে ইজতেমা করার তারিখ নির্ধারণ করেছে তাবলিগের দুই গ্রুপ। একটি গ্রুপ এক দফা এবং আরেক গ্রুপ দুই দফা ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেছে। মাওলানা সা’দ বিরোধীরা আখেরি মুনাজাতের পর আগামী বছরের ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। প্রথম দফা ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফা ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি। আর মাওলানা সা’দ পন্থিরা ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে ৩ থেকে ৫ জানুয়ারি। এ সময় তারা পাঁচদিনের জোড়ের তারিখও নির্ধারণ করে। এ বছরের ২২ থেকে ২৬ নভেম্বর এ জোড় অনুষ্ঠিত হবে।
সুত্র : ইত্তেফাক

পাঠকের মতামত

Comments are closed.