ঘুষ দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসব্রত!
অনলাইন সংস্করণঃ- ঘুষ দিতে দিতে বিরক্ত এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) সন্ন্যাস গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি শত মানুষের উপস্থিতিতে সন্ন্যাসী শিক্ষায় নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন ভারতের গুজরাটের সুরাট শহরের বাসিন্দা ২৫ বছরের যুবক কদম দোসি (২৫)।
ভারতীয় গণমাধ্যমের এক খবরে বলা হয়, হীরা ব্যবসায়ীর ছেলে সিএ পাশ করার পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়েছিলেন। তার বেতন ছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু কাজে গিয়ে বিভিন্ন ফাইল পাশ করাতে তাকে বার বার ঘুষ দিতে হতো। এতেই বিরক্ত হয়ে ওঠেন কদম দোসি। জৈন ধর্মাবলম্বী কদম দোসি তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নিজেকে একজন নিষ্ঠাবান জৈন ভিক্ষু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সন্ন্যাসী শিক্ষা গ্রহণ করবেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোকে কদম দোসি বলেন, ‘একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার সময় আমাকে শহরে সরকারি অফিসগুলোয় ফাইল পাশ করাতে হতো। কিন্তু সেখানকার কর্মকর্তারা আমাকে ঘুষ দিতে বাধ্য করতো। এমনও হয়েছে যে দিনে পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়েছিল। আমি খুব দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে পড়ি। চিন্তা করতাম, ফাইল পাস করাতে যদি অবৈধ পথ ধরতে হয় তবে এই শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণ কিসের জন্য?’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রচুর পরিশ্রম করে লেখাপড়া করেছি এই আশায় যে সমাজের সেবা করবো আর মরচে ধরা সিস্টেমটা বদলে দেব। কিন্তু পড়াশোনা শেষে এক প্রাইভেট ফার্মে সিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট) হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পর বুঝতে পারলাম একদিন খোদ আমাকেও এই গলদ রাস্তার পথিক হতে হবে। এজন্য আমি এ ধরনের সব অপকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখতে আলাদা পথ অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেই।’
এই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই জৈন ধর্মের বুনিয়াদি বিষয়গুলোর অনুসারী থাকলেও কখনো সন্ন্যাসী হওয়ার চিন্তা মাথায় ছিল না। আমার একজন গার্লফ্রেন্ডও ছিল এবং এসব নিয়ে আমি সাধারণ জীবন-যাপন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে এক বছর চাকরি করার পর জীবনের সত্যিকার শান্তির খোঁজ শুরু করি। আর সে সূত্রেই সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেই।’
কদমের বাবা প্রভু যোসি একজন হীরা ব্যবসায়ী। বাবার কাড়ি কাড়ি টাকা থাকলেও নিজেকে বাবার ব্যবসায় নিযুক্ত করেননি তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় ৯০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করা কদম ২০১৪ সালে সিএ কোর্স সম্পন্ন করেন। তার বার্ষিক বেতন ছিল ৭ লাখ টাকা।
