196636

মঙ্গলে বইছে বাতাস, শব্দ রেকর্ড করল নাসা, শুনে নিন আপনিও

আনন্দবাজার : মঙ্গল-ধ্বনি বাজিয়ে দিল ‘ইনসাইট’! তাকে ‘কান’ পেতে বেশি দিন থাকতে হল না। লাল গ্রহের মাটিতে পা ছোঁয়ানোর ১০ দিনের মধ্যেই ইনসাইট শুনতে পেল বইতে থাকা বাতাসের শব্দ।

ফের উস্কে দিল দৃশ্যতই রুখুসুখু ‘লাল গ্রহ’-এ এখনও প্রাণের স্পন্দন শুনতে পাওয়ার আশাও! বাতাস বইছে মানে, এখনও বায়ুমণ্ডল রয়েছে মঙ্গলে। ফলে, রয়েছে প্রাণের বেঁচেবর্তে থাকার অন্যতম ‘রসদ’ও!

বইতে থাকা বাতাসের শব্দ কেমন মঙ্গলে?

নীচু স্বরে বাতাসের সেই গা ছমছমে গুড়গুড়ে শব্দ শুনতে শুনতে উত্তেজনায় নিজেও কেঁপে উঠেছে নাসার পাঠানো ল্যান্ডার মহাকাশযান। আর সেই শব্দের কম্পন অনুভব করেই চুপচাপ বসে থাকেনি ইনসাইট। তা রেকর্ড করে আমার, আপনার শোনার জন্য মঙ্গল থেকে রিলে করে পাঠিয়েও দিয়েছে আমাদের।

শুনুন, মঙ্গলে বইতে থাকা বাতাসের শব্দ। সৌজন্যে: নাসা

https://www.youtube.com/watch?time_continue=3&v=ZK5bOZx2xXs

 

কত জোরে বাতাস বইছে মঙ্গলে?

মঙ্গলের পিঠে ওই বইতে থাকা বাতাসের শব্দ শুনেছে ইনসাইট, ঠিক সাত দিন আগে। গত ১ ডিসেম্বর। তার পর তা রেকর্ড করে পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরিতে রিলে করে পাঠিয়েছে ইনসাইট ল্যান্ডার। তা পরীক্ষা করে নাসা জানিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর মঙ্গলের বুকে বইতে থাকা বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ মাইল। তার মানে, সেকেন্ডে ৫ থেকে ৭ মিটার।

পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় সমতল এলাকায় আমাদের গ্রহে বাতাস বইতে থাকে গড়ে সেকেন্ডে ২০ মিটার গতিবেগের মধ্যে। তার সামান্য কম-বেশিও হয়।

নাসা জানিয়েছে, লাল গ্রহের মাটিতে নেমে সাত দিন আগে ইনসাইট যে বইতে থাকা বাতাসের শব্দ শুনে উত্তেজনায় কেঁপে উঠেছে থরথর করে, তা বয়েছে মঙ্গলের উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে। ইনসাইট পা ছোঁয়ানোর পর মঙ্গলের মাটি থেকে ধুলোও উড়ে গিয়েছিল একই পথে, একই দিকে।

কী ভাবে বাতাসের গা ছমছমে শব্দ শুনল ইনসাইট?

নাসা জানিয়েছে, ইনসাইটের দু’টি যন্ত্রে সেই শব্দ ধরা পড়েছে। তাদের একটি ‘এয়ার প্রেসার সেন্সর’। যা বসানো রয়েছে ইনসাইটের ভিতরে। তা ইনসাইটে থাকা ‘অক্সিলিয়ারি পেলোড সেন্সর সাবসিস্টেম’ (এপিএসএস)-এরই একটি অংশ। ‘এপিএসএস’ মঙ্গলের বুক থেকে তুলে আনবে মাটি। মঙ্গলের বুকে বসেই পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর জন্য।

অন্য যন্ত্রটি, ‘সাইসমোমিটার’। সেটি রাখা রয়েছে ইনসাইট ল্যান্ডারের ‘ডেক’-এ। যার আদত নাম- ‘সাইসমিক এক্সপেরিমেন্ট ফর ইনটেরিয়র স্ট্রাকচার (এসইআইএস বা ‘সেইস’)। ইনসাইটের রোবট হাত ওই ‘ডেক’টাকেই নামিয়ে দেবে মঙ্গলের মাটিতে। তার পর খোঁড়া হবে লাল গ্রহের মাটি। তখন ‘ডেক’-এ থাকা সাইসমোমিটার দেখতে শুরু করবে মঙ্গলের পিঠের নীচে এখনও কম্পন (মার্সকোয়েক) হয় কি না, হলে তার মান কতটা।

নাসা জানিয়েছে, এয়ার প্রেসার সেন্সরেই প্রথম সরাসরি ধরা পড়েছে বইতে থাকা বাতাসের কম্পন। দু’টি সৌর প্যানেলের (প্রতিটি লম্বায় সাত ফুট) উপর দিয়ে বাতাস বয়ে যাওয়ার ফলে কেঁপে উঠেছিল ইনসাইট। নাসার ল্যান্ডারের সেই কম্পন ধরা পড়েছে সাইসমোমিটারে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.