195286

হকারের জুতা বিলালো, ছিটালো পুলিশ!

রাজধানীর গুলশানের গুদারাঘাট এলাকার ফুটপাত সংলগ্ন সড়কে একটি রিকশাভ্যান। তার ওপরে রয়েছে বাহারি জুতা। ফুটপাত দিয়ে চলতে গিয়ে পথচারীদের কেউ কেউ দেখছিলেন তা। ঠিক এমন সময় সেখানে একজন পুলিশ কর্মকর্তা হাজির। ‘গাড়ি কার’ জিজ্ঞাসা করেই রিকশাভ্যান থেকে জুতা ছুড়ে ফেলেন। পথচারীদের জুতা নিয়ে যেতে বলেন। সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকা কথার একপর্যায়ে হকারকে ধাক্কা দেন। এমনকি রিকশাভ্যানের জুতা ছুড়ে ফেলেন লেকের পানিতে।

৭ মে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়ক ও ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে জুতা বিক্রি করায় ওই পুলিশ কর্তা এই কাণ্ড ঘটান।

ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আমজাদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা ইউসুফ। গুলশান থানা বলছে, আমজাদ হোসেন নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তা পেট্রোলের (টহল) দায়িত্বে রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমজাদ হোসেন ধাক্কা দিয়ে এক ছেলেকে সরিয়ে দেন। পথচারীদের জুতা নিয়ে যেতে বলেন। এই পুলিশ কর্মকর্তার কথায় পথচারীদের কেউ কেউ জুতা নিয়েও যান। যারা না নিয়ে যাচ্ছেন, তাদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে করেন আমজাদ হোসেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আমজাদ জুতা লেকে ছুড়ে মারেন। এভাবে তিনি ১৫-২০ জোড়া জুতা পানিতে ছুড়ে ফেলেন।

পুলিশ চলে গেলে পানিতে ফেলে দেওয়া জুতাগুলো লাঠি দিয়ে তুলেন হকার সায়েম ও তার সহযোগীরা। তবে পথচারীদের নিয়ে যাওয়া জুতা ফেরত পাননি সায়েম।

 

এ সময় সড়কের দুই পাশেই মানুষের ভিড় জমে যায়। পথচারীরা পুলিশের এই ধরনের কর্মকাণ্ডে হতাশা প্রকাশ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ‘জুতাগুলা ফিইক্কা ফিইক্কা ফালাই দিছে।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী হকার মো. সায়েম বলেন, ‘সকালবেলা আমরা জুতা ভর্তি গাড়িডা আনছি। আধা ঘণ্টা পর দেহি পুলিশের গাড়ি আইছে। ওই সুমায় দুকানে আমরা নাস্তা করতাছিলাম। গাড়ি কার জিগাইছে, আমরা তো ওইন খাড়াই রইছি। হঠাৎ গাড়ির মাল ধইরা ফেলাই দিছে। একটা একটা কইরা মাল (জুতা) পানির ভিতরে ফেলাই দিছে। মাইনষেরে দিয়া দিছে জুতা।’

 

সায়েম অভিযোগ করেন, ওই সময় তাকে দুইটা থাপ্পর দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা। পথচারীদের মধ্যে যারা জুতা না নিতে চেয়েছেন তাদেরকে বিশ্রি ভাষায় গালাগাল করেছেন আমজাদ।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, পেট্রোলে আমজাদ হোসেন নামে এক কর্মকর্তা রয়েছেন।

ওসি বলেন, ‘ওখানে (গুদারাঘাটের সড়কের ওপর) দোকান বসা নিষেধ। অবৈধ দোকান হলে দোকানদারকে আটক করবে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুতাগুলো আটক হবে। কিন্তু জুতা লেকে ফেলে দেওয়া, পথচারীদের দিয়ে দেওয়ার কথা না। উনি তো থানার না, উনি পেট্রোলের। উনি যদি বিষয়টা করে থাকেন, তাহলে আমরা বিষয়টা দেখব।’ প্রিয়

পাঠকের মতামত

Comments are closed.