195192

মেসির সেই ‘এল ক্লাসিকো’র জার্সি এখন গুয়েতেমালার কিশোরীর গায়ে!

গত ২৩ ডিসেম্বরের ‘এল ক্লাসিকো’র কথা মনে আছে নিশ্চয়। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সেই ম্যাচে শেষ মুহূর্তে জ্বলে উঠে নায়ক বনে যান লিওনেল মেসি। জোড়া গোল করে বার্সেলোনাকে এনে দেন ৩-০ গোলের জয়। নিজেদের ঘরের মাঠের সেই হারের মধ্যদিয়েই মূলত এবারের লা লিগার শিরোপা দৌড় থেকে ছিটকে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। তো সেদিন বার্নাব্যু’র এল ক্লাসিকোতে যে জার্সিটি পরে বাজিমাত করেছিলেন, সেই জার্সিটি কিন্তু এখন আর মেসির দখলে নেই। সেটি এখন গুয়েতেমালার এক কিশোরীর গায়ে!

প্রচণ্ড ভালোবাসা ও মনের জোর থাকলে যে সাত-সমুদ্র তেরো নদীর ওপাড়ের প্রিয় তারকার সঙ্গেও ‘উপহার’ আদান-প্রদান করা যায়, সেটিই প্রমাণ করে দিয়েছেন গুয়েতেমালার এই কিশোরী। প্রচণ্ড ভালোবাসার জোরেই প্রিয় তারকা মেসির সেই ‘এল ক্লাসিকো’র জার্সিটি এখন এই কিশোরীর গায়ে। জার্সিটির মালিকও এখন জিমেনা নামের এই কিশোরী। কারণ, প্রিয় ভক্তকে জার্সিটি উপহার দিয়েছেন মেসি!

গুয়েতেমালা মধ্য আমেরিকার দেশ। জিমেনার দেশ গুয়েতেমালা থেকে মেসির দেশ আর্জেন্টিনার হাজার হাজার মাইল দূরে। স্পেনের দূরত্ব আরও বেশি। কিন্তু প্রচণ্ড ভালোবাসায় সেই দূরত্বকে ঠিকই ঘুচিয়ে ফেলেছেন জিমেনা।

প্রিয় ভক্তকে নিজের জার্সি উপহার দেওয়ায় মেসির বদান্যতাই প্রকাশ পায়। তা হয়তো আছেও। কিন্তু প্রিয় তারকার কাছ থেকে এই জার্সি উপহার পেতে অন্ধ-ভক্ত জিমেনার ভূমিকাই বেশি। মেসি এক কথায় তার স্বপ্নের তারকা। জিমেনা নিজের রুমটাকে যেন মেসির একটা জাদুঘরই বানিয়ে ফেলেছেন। রুমজুড়ে মেসির সব ছবি। শুধু ছবিই নয়, মেসির নামাঙ্কিত অনেক অনেক জার্সিও আছে তার সংগ্রহে। সবগুলোই তিনি কিনেছেন, সংগ্রহ করেছেন গুয়েতেমালা থেকে।

সেই ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল প্রিয় তারকা মেসির একটা অটোগ্রাফ নেবেন। কিন্তু এল ক্লাসিকোতে মেসি নিজে পরে খেলা একটা জার্সি উপহার হিসেবে পাবেন, এমনটা তার সুন্দরতম কল্পনাতেও ছিল না। তবে ঈশ্বরের আশির্বাদে সেটাই এখন বাস্তব। এল ক্লাসিকোতে খেলা মেসির সেই জার্সিটি এখন তার গায়ে!

এই উপহার প্রাপ্তির পথটা অবশ্য পরিস্কার করেন তিনিই। স্বপ্নের তারকাকে মনের কথা জানানোর ভাবনা থেকেই দারুণ একটা উপায় পেয়ে যান জিমেনা। প্রথমে গুয়েতেমালা থেকে মেসির নাম ও ১০ নম্বর লেখা সংবলিত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের একটা জার্সি সংগ্রহ করেন। পরে সেই জার্সিটিতে নিজের মনের একটা কথা লিখে উপহার হিসেবে পাঠিয়ে দেন মেসির কাছে। মেসিকে উদ্দেশ্য করে জার্সির গায়ে জিমেনা লিখে দেন, ‘কখনো ফুটবল খেলা থামিও না।’

সুন্দরী এই কিশোরী ভক্তদের উপহারটি ঠিকই পৌঁছায় মেসির কাছে। সাত-সমুদ্র তেরো নদীর ওপাড়ের এক কিশোরী ভক্ত এমন একটা উপহার পাঠিয়েছেন, মেসি তার প্রতিদান না দিয়ে পারেন। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মেসি তাই উপহার হিসেবে জিমেনার কাছে পাঠিয়ে দেন গত ২৩ ডিসেম্বরের সেই এল ক্লাসিকোর জার্সিটি। জার্সি সঙ্গে অটোগ্রাফ সংবলিত নিজের কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের ছবিও পাঠিয়েছেন মেসি। তার একটা ছবি মেসি তুলেছেন জিমেনার পাঠানো আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সেই জার্সি পরে।

প্রিয় তারকার কাছ থেকে এই উপহার পেয়ে জিমেনা অভিভূত। বাড়িতে বেশির ভাগ সময়িই নাকি মেসির সেই এল ক্লাসিকোর জার্সিটি গায়ে চাপিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্বপ্নের তারকার জার্সিটি পেয়ে জিমেনা কতটা উচ্ছ্বসিত সেটি তার প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট। উপহার হিসেবে জার্সি হাতে পাওয়ার পরই এক প্রতিক্রিয়ায় জিমেনা জানিয়েছেন, ‘আমি যেদিন মারা যাব, তোমরা এই জার্সিটা দিয়ে আমাকে সমাহিত করো।’

মানে মরনের পরও প্রিয় তারকার উপহারটা নিজের গায়েই জড়িয়ে রাখতে চান জিমেনা! ভক্তরা বুঝি এমনই হয়!

উৎসঃ poriborton

পাঠকের মতামত

Comments are closed.