195084

সেই বিপাশার বিয়ে

সুনামগঞ্জের দিরাই থানার পুলিশ প্রায় ১০ বছর আগে ঠিকানাবিহীন, বাড়িঘর হারিয়ে ফেলা বিপাশাকে উদ্ধার করেছিলেন। তখন বয়স ছিল ৮ কিংবা ৯ বছর। নিজের নাম বিপাশা আক্তার মুন্নি আর বাবার নাম জামাল মিয়া ছাড়া কিছুই বলতে পারেনি।

যদিও পুলিশ বিপাশার আপনজনদের খুঁজে পেতে অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনো খোঁজ মেলেনি। প্রথমে তার ঠাঁই হয় নিরাপদ হেফাজতে। পরে ২০১৫ সাল থেকে তাকে রাখা হয় সিলেটের রায়নগর সরকারি শিশু বালিকা পরিবারে। দিনে দিনে বড় হয়েছে বিপাশা। এরই মধ্যে সে পেরিয়ে এসেছে ১৮ বছর।

২৭ এপ্রিল, শুক্রবার বিয়ে হচ্ছে সেই বিপাশার। তাকে ঘিরে মুখরিত পুরো শিশু বালিকা পরিবার আর সিলেট প্রশাসন।

পুরো সমাজসেবা অধিদফতর আপনজন হয়ে উঠেছে তার। অধিদফতরের কর্মকর্তারাই তার বিয়ে ঠিক করেছেন। সুনামগঞ্জেরই দিরাই উপজেলার বুড়াখালী রাজনগর (হালেয়া) গ্রামের প্রয়াত আবদুল আহাদের ছেলে আবদুল লতিফের সঙ্গে বিয়ে হবে বিপাশার। কনেপক্ষের হয়ে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জয়তি দত্ত।

সরকারি শিশু পরিবারের (বালিকা) উপ-তত্ত্বাবধায়ক জয়তি দত্তের ভাষ্য, যেভাবে আর দশটি বিয়ের আয়োজন হয়, বিপাশার বিয়েও ঠিক একইভাবে হচ্ছে। বরের খোঁজ পেয়ে উপ-পরিচালকসহ শিশু পরিবারের সদস্যরা বরের বাড়ি গেছেন। বরের মা রাবেয়া বিবিসহ পাত্রপক্ষও এসে দেখে গেছেন বিপাশাকে।

এভাবেই চূড়ান্ত হয়েছে বিয়ের তারিখ। আর শুধু সমাজসেবা অধিদফতর নয়, এ বিয়েতে যুক্ত হয়ে পড়েছে পুরো প্রশাসন। প্রায় ৩০০ মানুষ আপ্যায়িত হবেন বিপাশার বিয়েতে। বরপক্ষ থেকে আসবেন ১০০ অতিথি, কনেপক্ষ থেকে অংশ নেবেন ২০০ জন।

সিলেট সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন জানান, জেলা প্রশাসক আর পুলিশ সুপারও উৎসাহী হয়ে ভূমিকা রাখছেন এ বিয়েতে। বিপাশা যেন নিজেরই সন্তান এমন অনুভূতি নিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।

সূত্র:সমকাল

পাঠকের মতামত

Comments are closed.