193632

যেভাবে এলো আইফোন

ডেস্ক রিপোর্ট  : এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। আইফোনের ক্ষেত্রে কথাটি যেন পুরোপুরি খাটে। গোটা স্মার্টফোন দুনিয়ায় তোলপাড় করে জানুয়ারি, ২০০৭ এ পদার্পন হয় আইফোনের। এরপর থেকে চমকের পর চমক আসে এই ফোনের। সেই শুরুতে আইফোনের ধারণা কীভাবে এলো আর কীভাবেই বা আমাদের হাতে এসে পৌঁছাল।

অ্যাপল কোম্পানি প্রধান নির্বাহী স্টিভ জবস স্যান ফ্রান্সিসকোয় এক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো উন্মোচন করেছিলেন আইফোন। প্রথম আইফোন তৈরি প্রকল্পের একজন প্রকৌশলী ছিলেন অ্যান্ডি গ্রিনিয়ন – বিবিসির এ্যাশলি বায়ার্নের কাছে তিনি বর্ণনা করেছেন আইফোন কীভাবে তৈরি হয়েছিল সেই সময়ের কথা।

এই ফোনের ছিল একেবারে নতুন ধরণের টাচস্ক্রিন, সহজে ব্যবহারযোগ্য ইন্টারফেস, আর সুন্দর ডিজাইন সব মিলিয়ে দারুণ কিছু। সেই সঙ্গে করা যেতো প্রয়োজনীয় সব কাজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা এই ফোন দেখে চমকে উঠেছিল। সেটা তাঁদের দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।

অ্যান্ডি গ্রিনিয়ন এর আগে আইপড তৈরিতেও তাঁর ভূমিকা রাখেন। আইপড ছিল একটা মিউজিক প্লেয়ার। অবশ্য এর আগে থেকেই অ্যাপল কোম্পানি পরিচিত হয়ে উঠেছিল তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ডিজাইনের ম্যাকিন্টশ কম্পিউটার তৈরি করে।

অ্যান্ডির বন্ধু টনি ফেডাল। তার একটা ভিডিও এডিটিং এর জন্য ব্যবহৃত একটা গোলাকার ইউএসবি যন্ত্রাংশ ভিডিও জগ হুইল ছিলো। সেটাকে সে কাজে লাগাতে বলল। এরপর এমপিথ্রি ফাইল বাজানোর একটা অ্যাপের নমুনা চাইলো সে। বানানো হলোও। স্টিভ জবস একটা অনুষ্ঠানে সেটাকেই আইপড হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দিলো। এরপর এসেছিল ফোন তৈরির চিন্তা।

মোটরোলা এবং আইটিউনের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রে এলো ফোন তৈরির চিন্তা। মোটরোলা রকার নামে একটা ফোন তৈরি করল। সেই ফোনে আইটিউন থেকে মিউজিক বাজিয়ে দেখানো হলো। স্টিভকে সবাই বললো এটা ভালো ধারণা। তখন অবশ্য কোম্পানির ফোন নয়, একটা ওয়াইফাই বানানোর চিন্তা। তখন আবার কেউ বলল একটা ফোন হলে সেটা ওয়াইফাইতে যুক্ত হলেই তা দিয়ে কল পর্যন্ত করা যাবে। তখনই স্টিভের মাথায় ফোন বানানোর সিদ্ধান্ত এলো। অ্যাপল তার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আইফোনেও আলাদা ডিজাইন রেখেছিলো। তবে সেটি ছিলো আইপডের আদলে। সেটা দিয়ে ফোন করা যেতো। ডোল একটা ইন্টারফেস ছিলো। ব্যবহার করা বেশ কষ্টকর ছিল। এরপর অনেক চেষ্টায় নতুন আইফোন তৈরিতে মন দিলো সবাই। সেটা এতটা যুগান্তকারী কিছু হবে সেটা তখন কেউই জানতো না।

প্রথম প্রোটোটাইপ বা পরীক্ষামূলক মডেলটা এলো। দিন বদলাতে শুরু করলো অ্যাপলের। বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যেতো। এরপর এটি সবার সামনে তুলে ধরার আগে আইফোনের সফটওয়্যারে একটা ভাইরাস ধরা পড়লো। পরিকল্পনা নষ্ট হবার চিন্তা শুরু হলো।

জানুয়ারির প্রথমদিক প্রথম আইফোনের সব ভাইরাসজনিত সমস্যার সমাধান করা হলো। সেটি সবার সামনে তুলে ধরা হলো উদযাপনের মধ্য দিয়ে।

এরপর ২০০৭ সালের জুন মাসে উত্তর আমেরিকায় দোকান থেকে আইফোন বিক্রি শুরু হলো। এর আগে ছয় মাস ধরে চলেছিল প্রচারাভিযান। বিক্রি শুরু হতেই সাফল্য এলো। আর এর বর্তমান সাফল্য নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বাজারে ছাড়ার পর ১০০ কোটির বেশি আইফোন বিক্রি হয়েছে, অ্যাপলকে করেছে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান প্রতিষ্ঠান। এটা অবশ্যই আইফোনের পরম সাফল্যের ইতিহাস।

বাংলা ইনসাইডার

পাঠকের মতামত

Comments are closed.