191126

নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা?

ডেস্ক রিপোর্ট  : চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনিতে পরিবারের সঙ্গে থাকত নয় বছরের ফাতেমা আক্তার। পড়ত স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণিতে। গতকাল রোববার বিকেলে খেলতে বাসা থেকে বের হয় সে। এরপর আর ফেরেনি শিশুটি। ছয় ঘণ্টা পর এলাকার আরেক ভবনের সিঁড়িতে পাওয়া যায় তার লাশ।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ‘আয়শা মমতাজ মহল’ নামের একটি ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেনকে (৪০) আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশ বলছে, ধর্ষককে চিনে ফেলায় হয়তো শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ফাতেমার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। মর্গ সূত্র জানিয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। শিশুটির গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

শিশুটির বাবা জামাল হোসেন কাপড় ধোয়ার কাজ করেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ের মধে৵ ফাতেমা বড়। জামাল হোসেন  বলেন, প্রতিবেশী দুই শিশুর সঙ্গে ফাতেমা বাসা থেকে খেলতে বের হয়েছিল। সন্ধ্যার পরও বাসায় না ফেরায় ওই দুই শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা জানায়, খেলতে বের হয়ে ফাতেমার অনুরোধে তার বড় মামা ফখরুল ইসলামের দোকানে যায় তারা তিনজন। সেখান থেকে বাসায় ফিরে আসার সময় ফাতেমাকে আর দেখেনি তারা। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাননি জামাল।

নগরের আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদবলেন, রাত ১০টার দিকে থানায় খবর আসে, এক বাড়ির সিঁড়িতে একটি শিশুর লাশ পড়ে আছে। ভবনটির এক ভাড়াটে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল করে থানায় নিয়ে আসে। সেই সময় শিশুটির কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাত ১১টার দিকে থানায় এসে শিশুটির লাশ শনাক্ত করেন বাবা জামাল হোসেন। পরে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মনিরকে আটক করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওই ভবনের পাশেই মনিরের বাড়ি। সেখান থেকেই নিয়মিত ভবনটির ভাড়া তোলা ও দেখাশোনা করতেন তিনি। গতকাল রাত আটটার দিকে ওই ভবনে পানির তোলার মেশিন চালানোর জন্য এসেছিলেন মনির। শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর খুঁজতে গেলে পালিয়ে যান তিনি। পরে রাতেই আরেক বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর মাহমুদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক মনিরের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি রহস্যজনক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিশুটি কীভাবে ওই ভবনে এসেছিল এবং ধর্ষণে কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ মামলায় মনিরকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। প্রয়োজনে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। ধর্ষণের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.