‘আমার কোনো গানই শুধুমাত্র বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা নয়’
ডেস্ক রিপোর্ট: জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী। সবসময়ই মানসম্পন্ন গানের জন্য শ্রোতামহলে তিনি সমাদৃত। ধারাবাহিকভাবে বেশকিছু জনপ্রিয় গান এ তারকা উপহার দিয়েছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গানের সংখ্যার দিকে নজর দেননি তিনি, মনোযোগী হয়েছেন মানের প্রতি। ভালো কথা ও সুরের গানেই তাকে সব সময় পাওয়া গেছে এবং এখনো যাচ্ছে। স্টেজ, অ্যালবাম ও চলচ্চিত্রের গানে ফাহমিদা নবীর তুলনা কেবল তিনি নিজেই।
এ সময়েও গানের জগতে দাপুটে বিচরণ তার। সব মিলিয়ে বর্তমান সময়টা কেমন যাচ্ছে জানতে চাইলে ফাহমিদা নবী বলেন, খুব ভালো। আর তা ব্যস্ততার মাঝেই যাচ্ছে। শো চলছে। নতুন গান রেকর্ডিং চলছে। টিভি অনুষ্ঠান করছি। এইতো এভাবেই চলে যাচ্ছে সময়। বর্তমান ব্যস্ততা কি শো নিয়েই বেশি? ফাহমিদা নবী উত্তরে বলেন, হ্যাঁ। কারণ এখন শো-এর মৌসুম। তবে সব ধরনের শোতে অংশ নিই না আমি। বেছে বেছে নির্বাচিত শো-গুলোই করি। কারণ ভালো শ্রোতাদের সামনে গাইতেও ভালো লাগে। এখন অনেকটাই টানা শো চলছে। এই ব্যস্ততা চলবে আরো কিছু দিন। নতুন বছরেতো আপনার নতুন গান প্রকাশ হয়েছে। সাড়া কেমন পাচ্ছেন? উত্তরে ফাহমিদা নবী বলেন, ‘পড়ন্ত বিকেলে’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ হয়েছে সিডি চয়েজের ব্যানারে। এর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন গোলাম মোর্শেদ। প্রকাশের পর থেকে শ্রোতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। এর বাইরে ‘তুমি খুঁজছি’ শিরোনামের একটি গান প্রকাশ হয়েছে। এর সাড়াও ভালো। আসলে আমি চাই না রাতারাতি আমার গানগুলো একেবারে হিট হয়ে যাক। ভালোবেসে গান করি। আমি চাই শ্রোতারা ধীরে ধীরেই গানগুলো গ্রহণ করুক। আর এ গানগুলো আসলে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা নয়। আমার কোনো গানই শুধুমাত্র বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে করা নয়। এগুলো দীর্ঘদিন মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পাওয়ার মতো গান। এখানেই আসলে শিল্পীদের মূল স্বার্থকতা বলে আমি মনে করি। কিন্তু এখনতো ইউটিউবে ভিডিও এবং ভিউ গণনার প্রতিযোগিতা চলছে। এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? ফাহমিদা নবী হেসে বলেন, এটা নিয়ে আর কি বলবো। আসলে এগুলো নিয়ে অনেক বলেছি। প্রথম কথা হলো গানের কথা ও সুরের প্রতি মনযোগ দিতে হবে। সংগীতায়োজন ও গায়কি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। একটা শ্রুতিমধুর অডিও তৈরি করতে হবে। সেটা হওয়ার পর ভিডিও করা যেতে পারে। তবে এখন যেন ভিডিও নিয়েই বেশি প্রতিযোগিতা চলছে। ভিডিওতে চমক দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু অডিওর প্রতি জোর খুব কম দেখতে পাচ্ছি। অডিওটা শক্তিশালী হলে সেই গানটা বেশিদিন টিকবে। এটাই স্বাভাবিক। আর ইউটিউব অবশ্যই গান শোনার একটি বড় মাধ্যম এখন। যেহেতু সিডি প্রকাশ হচ্ছে না। এটা আমার কাছে কষ্টদায়ক। কারণ সংরক্ষণের জন্য হলেও সিডি করা প্রয়োজন। যাই হোক, ইউটিউবে ভিউ বেশি হলেই যে গান খুব শ্রোতাপ্রিয় তেমনটা নয়। ভিউ বেশি বা কম হোক গানকে অবশ্যই মানুষের হৃদয় জয় করতে হবে। হৃদয়ের ভিউটাইতো আসল! সুতরাং আমাদের সঠিক জায়গায় আসতে হবে। না হলে বাঁধনহারা হয়ে যাবে পুরো অডিও ইন্ডাস্ট্রি। এখান থেকে উত্তরণের উপায় কি? ফাহমিদা নবী বলেন, সবার আগে মানসিকতা পরিবর্তন করা দরকার। কারণ আপনি রাতারাতি জনপ্রিয় হতে গান করবেন নাকি ভালোবেসে গান করবেন সেটা দেখার বিষয়। দ্বিতীয়টা হলে সে দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। প্রথমটা হলে হঠাৎ করে হারিয়ে যেতে হবে। এছাড়াও কথা ও সুরের প্রতি মনযোগী হতে হবে। অডিওটাকে শক্ত করতে হবে। তারপর ভিডিও। সুত্র মানবজমিন