189801

‘সারা বছরই নির্মাতাদের ব্যতিক্রমী নাটক নির্মাণে সচেষ্ট থাকা উচিৎ’

 

ডেস্ক  রিপোর্ট: ফজলুর রহমান বাবু। মঞ্চ, ছোট পর্দা ও চলচ্চিত্রের এক দূর্দান্ত অভিনেতা। গল্পের চরিত্রের মধ্যে প্রবেশ করে দর্শকদের খুব সহজে তিনি ধরে রাখতে পারেন। চরিত্রের প্রয়োজনে কখনো দর্শকদের হাসান কখনো কাঁদিয়ে থাকেন এই অভিনেতা। তার সাবলীল অভিনয়ে দর্শকও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকে। একজন জাত অভিনয় শিল্পীর প্রতিটি গুণ এই অভিনেতার মধ্যে দেখা যায়।
অভিনয়ে স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৪ সালে ‘শঙ্খনাদ’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ¦ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এই অভিনেতার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘গহীন বালুচর’। এটি পরিচালনা করেছেন বদরুল আনাম সৌদ। গেলো ২৯শে ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পায়। এটি ছাড়াও গেল বছরে বাবু অভিনীত ‘নুরু মিয়া ও তার বিউটি ড্রাইভার’, এবং ‘হালদা’ শীর্ষক দুটি ছবি মুক্তি পায়। ছবিগুলো দর্শকদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়। এই প্রসঙ্গে বাবু বলেন, আমার প্রথম পরিচয় একজন অভিনয়শিল্পী। আমি বরাবরই পরিচালকের নির্দেশ মতো চলচ্চিত্রগুলোতে কাজ করেছি। পাশাপাশি অভিনয়ের সময় আমার ভাবনায় ছিল চরিত্রটিকে দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা। কারণ সিনেমা হলে দর্শক টাকা দিয়ে ছবি দেখে। তাই সেখানে দর্শকদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোনো শিল্পী টিকে থাকতে পারে না। দর্শকদের কাছে আমি কৃতঙ্গ আমার প্রতিটি ছবি তারা স্বানন্দে গ্রহণ করছেন বলে। আগামীতেও ভালো গল্প ও চরিত্রের চলচ্চিত্র নিয়ে দর্শকদের সামনে আসতে চাই। নতুন বছরে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নজাল’ ও রায়হান রাফি পরিচালিত ‘পোড়ামন-২’ ছবিতে বাবুকে দেখা যাবে। এই দুটি ছবি নিয়েও তিনি বেশ আশাবাদী। এদিকে গেল বছরটি চলচ্চিত্রের জন্য ভালো একটি বছর ছিল বলে মন্তব্য করেন এই অভিনেতা। ছোট পর্দায়ও ফজলুর রহমান বাবু নিয়মিত অভিনয় করছেন। বিভিন্ন চ্যানেলে তার অভিনীত কচি খন্দকারের ‘সিনেমা হল’, ও নেয়ামুলের ‘কাগজের ফুল’সহ কয়েকটি ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে। ছোট পর্দায় বর্তমানে কেমন কাজ হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গেল বছর আমাদের টিভি নাটকে পরিবর্তন দেখা গেছে। নাটকের গল্প ও নির্মাণে নতুনত্ব দেখানোর চেষ্টা ছিল নির্মাতাদের। এ বছরও তা অব্যাহত আছে। অভিনয়শিল্পীরাও গেল কয়েক বছরের চেয়ে এখন নাটকের গল্প ও চরিত্রের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়েছেন বলে আমি মনে করি। তবে গেল বছরে যে নাটকগুলো দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছে সেগুলো বিশেষ দিবসের নাটক ছিল। আমি মনে করি সারা বছরই নির্মাতাদের ব্যতিক্রমী নাটক নির্মাণে সচেষ্ট থাকা উচিৎ। তাদের বিশেষ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকাই উত্তম। এই অভিনেতা নাটকের বাজেট নিয়েও কথা বলেন। তার মতে, ভালো নাটক নির্মাণের জন্য সঠিক বাজেটের প্রয়োজন। কিন্তু এখন আমাদের অনেক নির্মাতা সঠিক বাজেট পাচ্ছেন না। ফলে অনেক সময় দায়সারা ভাবে তারা কাজ করেন। নাটকে যে পরিবর্তন শুরু হয়েছে সেটি ধরে রাখতে হলে টিভি চ্যানেলগুলোর বাজেটের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এই সময়ে প্রায় সব টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রেই নতুন নতুন মুখ দেখা যায়। কিন্তু কিছু দিন পরেই তারা আবার হারিয়ে যায়। এর কারণ কি? এই প্রশ্নের উত্তরে বাবু বলেন, নতুনদের মধ্যে অস্থিরতা বেশি দেখা যায়। এদের অনেকের অভিনয় জানার ও শেখার আগ্রহ কম থাকে। তারা অভিনয়ের চেয়ে তারকাখ্যাতির পিছনে বেশি দৌঁড়ায়। একটা সময় নির্মাতারা তাদের ওপর কাজের জন্য কোনো আস্থা পান না। তখন বাধ্য হয়েই তাদের অভিনয় থেকে বিদায় নিতে হয়। অভিনেতা পরিচয়ের বাইরে বাবু সংগীতশিল্পী হিসেবেও দারুণ সমাদৃত। ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রে দুটি গান গাওয়ার মাধ্যমে সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘ইন্দুবালা’ প্রকাশ হয় ২০০৯ সালে। তবে তিনি নিজেকে সংগীতশিল্পী নয়, অভিনয়শিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে জানান। গান গাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি শখের বশে গান করি। এটি নিয়ে আমার কোনো ব্যস্ততা নেই। গানের কথা ও সুর যদি পছন্দ হয় তাহলে সেই গানটিতে কন্ঠ দেই। সুত্র মানবজমিন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.