189462

অনশনে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা

 

ডেস্ক রিপোর্ট :  সারা দেশে প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন সহকারী শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হলে আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষার ফল ও বই বিতরণ কর্মসূচি বয়কট করার হুমকি দিয়েছেন। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাজোটের ব্যানারে এ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষকরা।
এ কর্মসূচিতে সহকারী শিক্ষক সমাজ, সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন, সহকারী শিক্ষক সমাজ-২, সরকারি সহকারী শিক্ষক সমিতি, সহকারী শিক্ষক সমাজ-৩, সহকারী শিক্ষক সমিতি-২, সহকারী শিক্ষক ফোরাম, সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে কয়েক হাজার শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষক সমিতির চারটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষকরা পাটি, পত্রিকা বিছিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। পুরুষদের সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে নারী শিক্ষকরা এসেছেন আমরণ কর্মসূচিতে।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন।
কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিতে ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০) বেতন চান। শিক্ষকরা জানান, এ বৈষম্য নিরসন করতে আমরা নানা কর্মসূচি পালন করেছি। এরপর অনশন কর্মসূচি দিয়েছি। সরকারকে একাধিকবার সময়ও দিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি কর্ণপাত করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অনশন শুরু করেছি।
শিক্ষকরা হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের দাবি না মানলে বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ বন্ধ ও বই বিতরণ বন্ধ থাকবে। অনশনে কাফনের কাপড় পরে অংশ নেয় অনেক শিক্ষক। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী আবু নাসের আজাদ বলেন, শিক্ষকরা এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে। আন্দোলন প্রত্যাহার করতে গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার দপ্তরে সহকারী শিক্ষক প্রতিনিধিদের ডেকেছিলেন। কোনো সমাধান ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে। বৈঠকে শিক্ষক প্রতিনিধিরা দাবির বিষয়টি মহাপরিচালককে জানিয়েছেন। তিনি দাবিটি বিবেচনায় নেয়ার আশ্বাস দিয়ে আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। তবে এতে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচিতে আমরা জড়ো হয়েছি। প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের এক দফা আন্দোলনের সঙ্গে সকল শিক্ষক সংগঠনকে মতপার্থক্য ভুলে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছি।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দাবি-দাওয়া নিয়ে সহকারী শিক্ষকদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। তাদেরকে দাবির বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস এবং তারা যাতে ক্লাস ছেড়ে আন্দোলনে না যান সেই প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তারপরও তারা আন্দোলনে নেমেছেন। সূত্র মানবজমিন

পাঠকের মতামত

Comments are closed.