188816

পাত্রী রোহিঙ্গা? বিয়েতে কড়া নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের

রোহিঙ্গা কোনও পাত্র বা পাত্রীকে বিয়ে করতে পারবে না বাংলাদেশি কোনও বর বা কনে। যদি কোনও কাজি বা নিকাহ রেজিস্ট্রার নাগরিকত্ব লুকিয়ে কোনও রোহিঙ্গার সঙ্গে দেশের কোনও যুবক বা যুবতীর বিয়ে দেন তবে তার বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেবে বাংলাদেশ সরকার। বুধবার হাসিনা সরকারের আইনমন্ত্রকের তরফে দেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের জেরে প্রায় ছয় লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজার ও টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে। মানবিক কারণেই দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই শিবিরের যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। রোহিঙ্গা-জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে কড়া নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা ও পুলিশ কর্তারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বয়ং মায়ানমার গিয়ে এদিনই নেত্রী আন সান সু কির সঙ্গে শরণার্থী সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এমনই প্রেক্ষাপটে এদিন এক বিজ্ঞপ্তিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেশের পাত্র-পাত্রীদের বিবাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশ সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের তরফে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশি যুবকদের সঙ্গে শরণার্থী রোহিঙ্গা মেয়েদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয় হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিয়ের কারণ দেখিয়ে রোহিঙ্গারা বসবাস করার বৈধ নথি তৈরির চেষ্টা করছে। ”

কিন্তু সরকার বিয়ে নিয়ে এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করতেই বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থা প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে। দু’টি মনের সম্পর্ক, প্রেমকে কোনও আইন বা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আটকানো যায় না বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলি দাবি করেছে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের তরফে দাবি, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্যই এটা করা হয়েছে। যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, প্রথমত, বিয়ের ছদ্মবেশে দেশের জনতার সঙ্গে রোহিঙ্গারা মিশে যাক তা চাইছে না শেখ হাসিনা সরকারের। দ্বিতীয়ত, শরণার্থী শিবিরের একটা বড় অংশ নারী। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী শিবিরে রয়েছে যাঁরা স্বামী অথবা বাবাকে হারিয়েছেন। এই বিয়ের সুযোগে কোনওরকমভাবে ওই সমস্ত অসহায় নারীকে প্রতারিত না করা হয় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা বিয়ে নিষিদ্ধ করা হল বলে আইনমন্ত্রকের ব্যাখ্যা।

আইনমন্ত্রী জানান, “রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি দেখিয়ে বিয়ের রেজিস্ট্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।” এই শরণার্থী ছাড়াও আরও চার লাখ রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গোপনে সীমান্ত পেরিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া এই সমস্ত শরনার্থীরা বহু অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে। তাদেরও আটকাতে বিয়ে নিয়ে এমন কড়া বিজ্ঞপ্তি বলে দাবি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.