188718

বোর্নভিটায় উপকার পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, ঋত্বিক, কাজল…

যেখানে স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্বীকারোক্তি রয়েছে, সেখানে চোখ বন্ধ করে ভরসা ছাড়া বাঙালি তথা ভারতীয়দের আর উপায় কী? “বোর্নভিটা সেবনে উপকার পাইয়াছি”, ১৯৩৭ সালের বিজ্ঞাপনে নোবেলজয়ী কবির এই উদ্ধৃতিকেই নিজেদের বিজ্ঞাপনে তুলে ধরেছিল ফুড ড্রিঙ্কস প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘বোর্নভিল্‌এ ক্যাড্‌বারী কোম্পানী’। সেই থেকেই চলে আসছে। কবিগুরু রবি ঠাকুর যদি মার্গদর্শক হন, তবে অনুসারী হলেন বলিতারকা ঋত্বিক রোশন থেকে ডিভা কাজল। জন্মলগ্নের পর ৭০-এ পা রাখল বোর্নভিটা। সময় বদলেছে। বিজ্ঞাপন বদলেছে। কালের নিয়মে বদল হয়েছে বিজ্ঞাপনের ব্যবহৃত মুখেরও। তবে বোর্নভিটায় বাঙালির ভরসা থেকেছে অটুট, এমনই দাবি বোর্নভিটার আদিপ্রস্তুত কারক মনডেলেজ ইন্ডিয়া। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এই পণ্যের স্বত্ব কিনে নেয় ক্যাডবারি। পণ্য থেকে প্যাকেজিং, যুগ বদলের সঙ্গে সব বদলেছে কেবল বদলায়নি নাম। ‘বোর্নভিটা’-কে ‘বোর্নভিটা’-ই রেখেছে ক্যাডবারীও।

মনডেলেজ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড হল আন্তর্জাতিক স্ন্যাক এবং ফুড প্রস্ততকারী মনডেলেজ ইন্টারন্যাশনালের একটি অংশ। হেলথ ড্রিঙ্কস প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে বোর্নভিটা ভারতে এখন দ্বিতীয় স্থানে। প্রথমে রয়েছে হর্লিক্স। মনডেলেজ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের বাকি পণ্যগুলির থেকে বোর্নভিটার গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলক বেশি, যে কারণে কোম্পানি কখনই এর নাম বদল করেনি। মনডেলেজ ইন্ডিয়ার সহকারী ডিরেক্টর অমিত শাহ জানিয়েছেন, “আমরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী অনেকসময়ই টুকটাক পরিবর্তন করে থাকি, কিন্তু ব্র্যান্ডের (বোর্নভিটা) ক্ষেত্রে আমরা কোনও পরিবর্তন করিনি।”

ইউরোমিনটরের দাবি, ভারতে প্রায় ১৩.১ শতাংশ বাজারের দখল নিয়েছে বোর্নভিটা। অন্যদিকে ৫১.৮ শতাংশ বাজারের দখল রয়েছে হর্লিক্সের (২০১৬ সালে ৭,২৭০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে হর্লিক্স)। এখন প্রশ্ন, এত পুরনো হয়েও হর্লিক্স এবং বোর্নভিটার মত পণ্য কীভাবে এখনও ভারতীয় বাজারে একাধিপত্য কায়েম করে রেখেছে? ব্র্যান্ড কনসালটেন্ট হরিশ বিজোর জানিয়েছেন, মৌখিক প্রচার এবং ব্র্যান্ড ইউটিলিটি-এই দুই ক্ষেত্রেই নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ স্থানে উত্তীর্ণ করতে পেরেছে বোর্নভিটা এবং হর্লিক্স। আর সেই জন্যই বাজার প্রতিযোগিতায় নিজেদেরকে বলিষ্ঠ স্থানে বসিয়ে রাখতে পেরেছে এই কোম্পানিগুলি। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মত, ৬ থেকে ১২ বছরের মধ্যে মিল্ক-ফুড ড্রিঙ্কসকে সীমাবদ্ধ না রেখে ১৬-১৭ বছর পর্যন্ত গ্রাহক পরিসর বাড়িয়ে দিয়েই গগনচুম্বী সাফল্য অর্জন করেছে বোর্নভিটা।

গ্রাহক মনে বোর্নভিটা আরও বেশি করে গেঁথে যাওয়ার আরও একটা কারণ হল প্রোডাক্ট ব্র্যান্ডিং। কোম্পানির সহকারী ডিরেক্টর অমিত শাহ মনে করেন, “সবাই চ্যাম্পিয়ন হয়ে জন্মায় না, কঠোর অধ্যবসায় এবং অনুশীলন একজনকে চ্যাম্পিয়ন করে তোলে।” আর বোর্নভিটার বিজ্ঞাপন নিয়ে বলতে গিয়ে শাহ বলনে, “আমরা কখনই শুধুমাত্র ছোটদের টার্গেট গ্রুপ হিসেবে দেখি না এবং বিজ্ঞাপন তৈরির সময় কেবল ছোটদের কথা মাথায় রেখে বিজ্ঞাপন করি না। আমাদের গ্রাহক পরিসরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মায়েদের কথাই ভাবা হয় আর সেইমতই বিজ্ঞাপন হয়। এটাই আমাদের গ্লোবাল মার্কেটিং পরিকল্পনা।”

পাঠকের মতামত

Comments are closed.