187711

ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের শিশু মৃত্যুর একটা বৃহৎ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রোগ!

২০১৫ সালের পরিসংখ্যান বলছে, পরিস্থিতি ভয়াবহ। গোটা বিশ্বে প্রায় আড়াই লক্ষ শিশুর মৃত্যু হয়েছে যক্ষ্মা রোগে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, টিবি বা টিউবারকিউলোসিস মৃত্যুর ৬০% ঘটনা ঘটে মাত্র ছ’টি দেশে। তার মধ্যে প্রথম ভারত, তারপর রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, চিন, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা।
২০১৫ সালে বিশ্ব জুড়ে চোদ্দ বছরের কম বয়সি ১০ লক্ষ শিশু ও বালক টিবিতে আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আড়াই লক্ষ শিশুর। ভারতে শিশুমৃত্যুর তিন ভাগের এক ভাগ ঘটে অপুষ্টিজনিত কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের মধ্যে টিবি সংক্রমণের হার ও আশঙ্কা বেশি। বিশ্বে শিশুমৃত্যুর প্রথম দশটি কারণের মধ্যে যক্ষ্মা একটি অন্যতম কারণ। হু-র রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে কমবেশি ৫ লক্ষ শিশু টিবিতে ভোগে।

দ্বারকার বেঙ্কেটেশ্বর হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক সুনীল কুমার মেহেদিরাত্তা বলেন, শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমশ কমিয়ে দেয় অপুষ্টি। ফলে টিবির সঙ্গে মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়া প্রথম আক্রমণ করে ফুসফুসে। পরে তা শরীরের অন্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। গড়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ টিবি রোগীর বয়সই চোদ্দ বছরের নিচে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত অসচেতনতা, অসতর্কতা, সঠিক চিকিৎসার অভাবের জন্য এই রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা। গবেষকরা বলছেন, যক্ষ্মা শনাক্ত হয়েছে বা চিকিৎসা পেয়েছে, এমন শিশুদের রেকর্ড ঠিকমতো রাখা হয় না। স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে শিশু যক্ষ্মার বিষয়টিও অতটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। ফলে সমস্যা বাড়ছে।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে সঠিক মান বজায় না রাখার কারণে ওষুধ প্রতিরোধক যক্ষ্মা-জীবাণুর উদ্ভব ঘটছে৷ কোনও একটি বিশেষ ওষুধ প্রতিরোধ নয় বরং নানা ওষুধ প্রতিরোধ করতে পারছে এ জীবাণু৷ এসব জীবাণুকে বিশেষজ্ঞরা মাল্টিড্রাগ-রেজিস্টেন্স টিবি বা এমডিআর-টিবি হিসেবে অভিহিত করে থাকেন৷ ২০১২ সালে এ কারণে ভারতে নতুন রোগী হয়েছে ৬৪ হাজার৷ যার মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। ক্রমশ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে যক্ষ্মা বা টিবি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.