185608

নিষিদ্ধ তারপরও ভারতে থেমে নেই বাল্য বিবাহ

নূসরাত জাহান: সারা বিশ্বজুড়েই বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ। তারপরও আইনের তোয়াক্কা না করেই বাল্য বিবাহ চলছে। আর এ উপমহাদেশে বাল্য বিবাহ একটি বড় সমস্যা। বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে এ প্রথার প্রচলত আরো বেশি। ভারতের বিভিন্ন আদিবাসী গোত্রের মধ্যেও বাল্য বিয়ের প্রচলন আছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় গুজরাট রাজ্যের কুচ এলাকায় বসবাসরত রাবারি আদিবাসী গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠীর মধ্যে এখনও বাল্য বিবাহ হচ্ছে। রাজস্থান ও গুজরাটে আদিবাসী গোষ্ঠীর সাধারণ বিয়ে হয় নিজ গোত্রের সদস্যের সঙ্গে।

আইন অনুযায়ী, ভারতে মেয়েদের ১৮ ও ছেলেদের ২১ বছর বয়সে বিয়ের বিধান রয়েছে। দেশটিতে বাল্য বিয়ে নিষিদ্ধ থাকলেও এখানে এক তৃতীয়াংশ মেয়েরই ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। ভারতের সব ধর্ম ও গোত্রের মধ্যে এই চর্চা রয়েছে। ভারত সরকারের মতে, সব ধরনের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বাল্য বিবাহ। এছাড়া দারিদ্র ও ক্ষুধার দূর করার ক্ষেত্রেও এটা একটি সমস্যা। এর কারণেই প্রাথমিক শিক্ষা, লিঙ্গীয় সমতা ও শিশু মৃত্যু হার কমানো যাচ্ছে না। ভারত সরকারের মতে, বাল্য বিয়ের জন্য মেয়েরা আরো বেশি করে অসহায় হয়ে যায় এবং নির্যাতনের শিকার হয়।

এতো প্রতিবন্ধকতা যে বাল্য বিবাহ সেটা কিন্তু থেমে নেই। কর্তৃপক্ষ নানা ব্যবস্থা নিয়েও থামাতে পারছে না। রাবারি আদিবাসীদের একটি বাল্য বিয়ের ছবি তুলেছেন বিবিসির সাংবাদিক ফাওজান হোসেন।

ফাওজানের তোলা ছবিতে দেখা গেছে খুব ভোরে কম বয়সী বর গাড়িতে করে উদ্দেশে রওনা দেয়। আলাদা একটি গাড়িতে করে বরের নারী আত্মীয়রা বিয়ে বাড়িতে রওনা দেন।
দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি কাটাতে বর একটু ঘুমিয়ে নেয়। এসময় তার বাবা পাশে বসে পাখা দিয়ে বাতাস করে। কিছুটা সময় বিশ্রামের পরই সময় হয়ে যায় বিয়ের। বর বিয়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নেন।
পোশাক পরা হয়ে গেলে বর বাবার হাত ধরে বাইরে বের হয়ে আসে। যে জায়গায় বিয়ে হবে সেখানে বর কনে আসার অপেক্ষায় থাকে। এ সময় তারা ফটোসেশনও সেরে ফেলে। বিয়ের আসরের বাইরে কনের বন্ধুরা একটু তাস খেলে নেয়। এর মধ্যেই চলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। বিয়ের স্থলেই কনের মুখ প্রথম দেখে বর। বিবাহ সম্পন্ন হয়ে গেলেই খাবার দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর কনেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্য বিবাহ বন্ধ করা। বাল্য বিবাহ বন্ধ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানিয়েছেন, এ লক্ষ্য তখনই অর্জন করা সফল হবে যখন ভারতের মতো দেশে এটা বন্ধ করা যাবে। সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.